TRENDING:

Paschim Medinipur: স্বাধীনতা সংগ্রামে মেদিনীপুর "বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার"দের অবদান

Last Updated:

এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে বি-ভির আরো ৩ তরুণ সৈনিককে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়। রামকৃষ্ণ রায়, ব্রজকিশোর চক্রবর্তী ও নির্মল জীবন ঘোষ। ?

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
পশ্চিম মেদিনীপুরঃ ১৯৩০ সাল। বাংলা তথা সমগ্র ভারতবর্ষের (India) কাছে গৌরবোজ্জ্বল একটি বছর। একদিকে আইন অমান্য আন্দোলন, অপরদিকে বিপ্লবীদের অস্ত্রাঘাত, এই দ্বিমুখী অভিযানে উন্মত্ত হয়ে উঠলো ব্রিটিশ (British) রাজ শক্তি। অত্যাচারে, উৎপীড়নে আঘাতে লাঞ্ছনায় দেশের উদ্বেল যৌবনকে পঙ্গু করে দিতে চাইল ইংরেজ শাসকরা। দানবিক এই পশু শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াল মেদিনীপুর (Medinipur)। ইংরেজদের এই চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করল মেদিনীপুরের বি-ভি (বেঙ্গল ভলান্টিয়ার) ওদের সমগ্র দৃষ্টি তখন নিবদ্ধ হলো ম্যাজিস্ট্রেট (Magistrate) প্যাডির উপর। ১৯৩১ সাল। প্যাডি সদর্পে ঘোষণা করে বসলেন মেদিনীপুরকে তিনি এমন শিক্ষা দেবেন যাতে মেদিনীপুর (Medinipur) কোনদিনই তা না ভোলে। এদিকে বি-ভির একশনস পার্টির সংকল্প : কোন শ্বেতাঙ্গ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে মেদিনীপুরের (Medinipur) শাসনকার্য করতে দেওয়া হবে না। এ সংকল্পের রূপায়নে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ওরা বেছে নিলেন প্যাডিকে।
বেঙ্গল ভলান্টিয়ারের সদস্যরা
বেঙ্গল ভলান্টিয়ারের সদস্যরা
advertisement

১৯৩১ সালের ৭ ই এপ্রিল। সন্ধ্যায় জেলা স্কুলের শিক্ষা প্রদর্শনীতে এসেছেন প্যাডি। বিমল দাশগুপ্ত ও জ্যোতি জীবন ঘোষ ওৎ পেতেই ছিলেন। অকস্মাৎ গুলির শব্দ : ধুলায় লুটিয়ে পড়লেন মি: প্যাডি। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে রণক্ষেত্র থেকে সরে পড়লেন বিপ্লবীরা। ভয়ে কেউ ওদের পিছু নিল না। কেবল ছোট্ট একটি ছেলে \"বিমলদা\" বলে চিৎকার করে উঠেছিল। বিমলের নাম এইভাবে রটে গেল। এই অভাবিত বিস্ফোরণে স্থগিত হলো ব্রিটিশ শক্তি। বিস্মিত হল সমগ্র দেশ। আশা ও উদ্দীপনায় আরো একবার জেগে উঠল দেশের তরুণ শক্তি। যতই হোক না কেন ইংরেজের স্পর্ধা কিন্তু কমলো না। এক ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট যাবেন আর একজন আসবেন সেই সূত্র ধরে ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট প্যাডি যাওয়ার পর এলেন ডগলাস।

advertisement

১৯৩১ সালের ৭ ই এপ্রিল থেকে ১৯৩২ সালের ৩০শে এপ্রিল মাত্র ১ বছর ২৩ দিন। এরই মধ্যে তারও ভবোলীলা সাঙ্গ হল। জেলা বোর্ডের সবার সশস্ত্র পরিবেষ্টিত জেলাশাসক বিপ্লবীর গুলিতে প্রাণ দিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের নায়কও বি-ভির দুই দুঃসাহসিক সেনানী। প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য ও প্রভাংশু পাল। প্রভানসু খোঁজ পায়নি পুলিশ। প্রদ্যুৎ এর রিভলবার বিকল হয়ে যাওয়ায় প্রদ্যুৎ ধরা পড়লেন। বিচারে তার প্রাণদণ্ড হলো। ১৯৩৩ সালের ১২ জানুয়ারী মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে ফাঁসির মঞ্চে জীবনের জয়গান গাইলেন প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য। অমরলোকে আরো একটি আলো জ্বলে উঠলো।

advertisement

এবার ব্রিটিশ সিংহ সত্যই ভীত। এক বছরের ব্যবধানে ওপারে চলে গেল এক এক করে শ্বেতাঙ্গ জেলাশাসক। এখনতো শ্বেতাঙ্গ ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়াই ভার। মেদিনীপুর কে যারা শিক্ষা দিতে এসেছিলেন তাদেরকে এমন শিক্ষা মেদিনীপুর দিল, যে আর কোনও শ্বেতাঙ্গ রাজি হলোনা মেদিনীপুরে আসতে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর এলেন বার্জ। দারুন সাবধানী ও সতর্ক। বাড়ি থেকে বড় একটা বের হন না। প্রহরীরা বাড়িতেই তাকে ঘিরে থাকে। তাছাড়া তার সংকল্প এপ্রিল মাসে তিনি কোথাও যাবেন না। কেননা এপ্রিলেই নিহত হয়েছেন প্যাডি, আবার এপ্রিলেই ডগলাস। এপ্রিল তার কাছে এক বিরাট বিভীষিকা। এপ্রিল কোনরকমে কাটলো। কিন্তু বিধির বিধান কাটলো না। বিধির বিধান কাটবে এমন শক্তিমান মানুষকে আছে ? বার্জ তো দূরের কথা। মে, জুন, জুলাই, তিন মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পরেই সাহস একটু একটু করে বাড়তে লাগল বার্জ সাহেবের। আগস্টে আরো কিছু বেশি সাহস পেলেন, যেতে শুরু করলেন এখানে-ওখানে। নামকরা খেলোয়ার তিনি, খেলা ছাড়া থাকতে পারেন না। আর এই খেলাই তার কাল হলো।

advertisement

View More

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
পুজো শেষ হতেই ঝাঁকে ঝাঁকে পদ্মার ইলিশ! জলের দরে টাটকা মাছ না খেলেই নয়
আরও দেখুন

২রা সেপ্টেম্বর, পুলিশ গ্রাউন্ডে একটি প্রদর্শনী খেলা। বার্জ অংশগ্রহণ করবেন বলে মনস্থির করলেন। সে সংবাদ সংগ্রহ করলেন মেদিনীপুরের ছেলেরা। তারপর খেলার মাঠেই গুলির শব্দ শোনা গেল। নিহত হলেন বার্জ। মৃগেন দত্ত ও অনাথ বন্ধু পাঁজা শত্রুর সঙ্গে সম্মুখ সমরে ক্ষেত্রেই জড়িয়ে পড়লেন। ঘটনাস্থলে গুলিতে প্রাণ ত্যাগ করলেন অনাথ বন্ধু পাঁজা। গুরুতর আহত অবস্থায় মৃগেন দত্তকে ভর্তি করা হল হাসপাতালে, পরের দিন ৩রা সেপ্টেম্বর ১৯৩৩ সালে হাসপাতালে মৃত্যু হল মৃগেন দত্তের। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে বি-ভির আরো তিনটি তরুণ সৈনিককে প্রাণদণ্ড দেওয়া হল। তারা হলেন রামকৃষ্ণ রায়, ব্রজকিশোর চক্রবর্তী ও নির্মল জীবন ঘোষ। মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে ব্রজকিশোর চক্রবর্তী রামকৃষ্ণ রায় ফাঁসির দড়ি কন্ঠে ধারণ করলেন ২৫ শে অক্টোবর ১৯৩৪। নির্মল জীবন ঘোষ ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ করেন তার পরের দিন ২৬ শে অক্টোবর।বিপ্লব তীর্থ মেদিনীপুর আজ শহীদ-তীর্থ।

advertisement

বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম মেদিনীপুর/
Paschim Medinipur: স্বাধীনতা সংগ্রামে মেদিনীপুর "বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার"দের অবদান
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল