বিশালাকৃতি ছাগ বলির জন্য বিখ্যাত দক্ষিণা ও আবালে কালী। কালী পুজো (Kali Puja 2021) নিবেদন হিসেবে দেওয়া হয় বিশাল আকৃতির ছাগ বলি। এইজন্যই বিখ্যাত অন্ডালের উখড়া গ্রামের ব্যানার্জি পাড়ার দক্ষিণা কালী ও আবালে কালী। ব্যানার্জি পাড়ায় রয়েছে পাশাপাশি দুটি মন্দির। যার মধ্যে একটি দক্ষিণা কালীর মন্দির, অপরটি আবালে কালীর।
প্রায় ৩০০ বছর আগে আবালে কালীর পুজোর (Kali Puja 2021) সূচনা হয়। সূচনা করেন পরিবারের পূর্বপুরুষ মহাভারত মুখার্জি। পরিবারটির আদি বাড়ি ছিল দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের বালিজুরি গ্রামে। পরবর্তীকালে তারা উখড়া গ্রামের বাসিন্দা হন। আসার সময় কালীর কবজ সঙ্গে নিয়ে এসে উখড়া গ্রামের ব্যানার্জি পাড়ায় কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। কালী প্রতিমার সাথে থাকে পাতাল প্রবেশ আবেলেশ্বর শিবের মূর্তি। সেই কারণেই এই কালী আবালে কালী নামে পরিচিত।
advertisement
পাশেই রয়েছে দক্ষিণা কালীর মন্দির। দুর্গাপুরের ভরতপুর থেকে সপরিবারে উখড়া গ্রামে আসার সময় কুলদেবতা দক্ষিণেশ্বর কালীকে সাথে নিয়ে এসে এখানে পুজোর সূচনা করেন পরিবারের পূর্বপুরুষ দিনবন্ধু মুখোপাধ্যায় ও বেনীমাধব মুখোপাধ্যায়। কালী প্রতিমার ডান পা-টি সামনে থাকে। তাই এই কালী দক্ষিণা কালী নামে পরিচিত। প্রায় আড়াইশো বছর আগে দক্ষিণা কালীর পুজোর সূচনা হয় বলে জানান মুখার্জি পরিবারের প্রবীণ সদস্য সুনীল মুখার্জী।
আবালে ও দক্ষিণা কালী, দুটি পুজোতেই বিশাল আকৃতির ছাগ বলি হয় প্রতিবছর। দুটি পুজোতেই পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও অংশ নেই গ্রামের মানুষজন।
অন্যদিকে, গোপালপুরের মুখোপাধ্যায় পরিবারের দেবী কালী এবার ২৩৭ বছরে পা দিল।মুখোপাধ্যায় পরিবারের দেবীর প্রতিষ্ঠা করেন গোবিন্দবন্ধু মুখোপাধ্যায়। ৮১ বছর পূর্বে এই পরিবারের কালী পুজোয় সব ধরনের বলি প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। সেসময় পরিবারের সেজ সন্তান ভবানীশেখর মুখোপাধ্যায় দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে চলে যান। সেই সময় পরিবারের কর্তা অতুলকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সন্তান হারানোর পরে সিদ্ধান্ত নেন, মায়ের সামনে আর কোন বলিই তিনি দেবেন না। সেই থেকেই মুখোপাধ্যায় পরিবারের কোনরকম বলিই হয় না।
এখানে দেবীর ভোগে রয়েছে বিশেষত্ব। মায়ের ভোগে দেওয়া হয় পাঁচ সের পাঁচ পোয়া চালের পায়েস, খিচুড়ি, নয় রকমের ভাজা এবং ফল ও মিষ্টান্ন। মুখোপাধ্যায় পরিবারের দেবীকে নিয়ে স্থানীয় এলাকার মানুষজন উৎসবের আমেজে মেতে ওঠে তিনদিন ধরে। তবে এই দু'বছর মুখোপাধ্যায় পরিবার সরকারের কোভিড বিধি মেনে চলেছেন। তাই জাঁকজমকে অনেকটাই কাটছাঁট করা হয়েছে।






