স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্রামের অনেক যুবকের বয়স ৩০ এর গণ্ডি পেরিয়েছে। কিন্তু যখন কোথাও বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তারা যাচ্ছেন, তখন গ্রামের নাম শুনেই পিছিয়ে যাচ্ছেন পাত্রী পক্ষ। গ্রামের প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বিয়ে দেওয়া নিয়েও একই সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে তাদের। স্থানীয়দের অভিযোগ, ৩৫ বছর আগে যে ছবিটা গ্রামে ছিল, সেই ছবিটার কোনও বদল এখনও পর্যন্ত হয়নি। ভোট আসে, ভোট যায়, বহু প্রতিশ্রুতি ভেসে আসে। কিন্তু তার বাস্তবায়ন এখনও হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, সবকিছুতেই তারা পিছিয়ে পড়ছেন রাস্তার অভাবে। আর কর্দমাক্ত একফালি রাস্তা, এখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৈবাহিক জীবন শুরুর ক্ষেত্রেও। যার ফলে রীতিমতো আতঙ্কিত বিদবিহার পঞ্চায়েতের রায়ডাঙ্গা।
advertisement
প্রসঙ্গত, ৩৫বছর ধরে প্রায় ৩০টি পরিবারের কয়েকশো মানুষের বসবাস করেন এখানে। কিন্তু এখনও নেই পাকা রাস্তা। এমনকি বেশ কিছু পরিবারের কাছে এখনও পৌঁছয় নি বিদ্যুৎ পরিষেবাও। এলাকায় পানীয় জলের সংকটও দেখা যায়। কেউ অসুস্থ হলে, চ্যাংদোলা করে নিয়ে যেতে হয় দূরের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। কারণ এলাকায় পৌঁছয় না কোনও গাড়ি।৩৫ বছর আগের সেই ছবিই ধরা পড়ছে কাঁকসার বিদবিহারের রায়ডাঙায়। অভিযোগ, এই সমস্ত সমস্যার জেরে এখন এলাকার যুবকদের সঙ্গে বিয়ে দিতে এগিয়ে আসছে না পাত্রীপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাস্তা, পানীয় জল, পথবাতির ব্যবস্থা না হলে ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন এলাকাবাসী।
রায়ডাঙ্গার দু'পাশে রয়েছে চাষের জমি। মাঝখানে ৩৫ বছর আগে তৎকালীন বাম সরকারের দেওয়া পাট্টায় বসবাস শুরু করেন বেশ কিছু পরিবার। এখন প্রায় ৩০র গন্ডি ছাড়িয়েছে সেই সংখ্যা। স্থানীয় ছেলে মেয়েদের স্কুলে যেতে হয় চাষের জমি পেরিয়ে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লেও চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে বর্তমান সময় স্থানীয়রা কি করবেন, তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না।
গ্রামের মানুষজন বলছেন, ভোট এলে প্রতিশ্রুতির বন্যা বয়ে দেন নেতারা। ভোট পেরোলে কেউই তাদের আর চিনতে পারেন না। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তাই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে স্থানীয়রা বলেছেন, দ্রুত এলাকার উন্নয়ন না হলে, পঞ্চায়েত ভোটে ভোট দিতে কেউই যাবেন না। এই বিষয়ে কাঁকসার বিদবিহার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন সূত্রধর স্থানীয়দের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। বলেছেন, সত্যিই দীর্ঘদিনের সমস্যা। দ্রুত কি করে ওই এলাকায় রাস্তা নির্মাণ করা যায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে। তবে রায়ডাঙ্গা আর প্রতিশ্রুতি চান না। চান প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন।
Nayan Ghosh