নাইট শিফট ডিউটি করার সময় হঠাৎই চলন্ত কনভেয়ার বেল্টের ওপর পড়ে যান তিনি। মুহূর্তের মধ্যে চার টুকরো হয়ে যায় তার দেহ। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টার পর তার খন্ডিত দেহ উদ্ধার করা গিয়েছে। উদ্ধারের পর দেহের ছিন্নভিন্ন টুকরা গুলি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর বি-জোনের বঙ্কিমচন্দ্র এভিনিউ এর বাসিন্দা ছিলেন আশুতোষ ঘোষাল। পরিবারে তার পরিবারে স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে।
advertisement
আশুতোষ বাবুর ছেলে বর্তমানে ব্যাঙ্গালোরে কর্মরত বলে জানা গিয়েছে। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনিও বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছেন। জানা গিয়েছে, ছেলের বিয়েরও ঠিকঠাক করছিলেন ইস্পাত কর্মী তথা গণিতের শিক্ষক আশুতোষ ঘোষাল। চলছিল বাড়ি সাজানোর কাজকর্ম। তার মধ্যেই হঠাৎ এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। যে মর্মান্তিক ঘটনার পরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবার ও ইস্পাত নগরীর বাসিন্দাদের মধ্যে। তবে শুধু ইস্পাত কর্মীই নয়। আশুতোষ বাবুর প্রধান ধ্যান জ্ঞান ছিল গণিত। গণিতের কঠিন ফর্মুলা কিভাবে ছাত্রদের কাছে সহজে বোধগম্য করে তোলা যায়, তা ভেবেই বেশিরভাগ সময় ব্যয় করতেন শহরের অংকের দেবতা আশুতোষ ঘোষাল।
আরও পড়ুনঃ দুর্গাপুরের অংশ এ কোন গ্রাম! যেখানে এখনও নেই রাস্তা!
বর্তমানে তার পড়ুয়া সংখ্যা ছিল ৪০০ এর কাছাকাছি। তবে তার শিক্ষকতা জীবনে, প্রায় ছয় হাজার সফল পড়ুয়া এই শিক্ষকের কাছ থেকে গণিতের জটিল ভাষাকে সহজ করতে পেরেছেন। স্বাভাবিকভাবেই এই শিক্ষকের মৃত্যুর খবরে ইস্পাত কর্মীরা যেমন শোকাহত, যেমন ভাবে শোকাহত তার পরিবার, পরিজন প্রতিবেশীরা, তেমনভাবেই শোকস্তব্ধ তার ছাত্রছাত্রীকূল। প্রসঙ্গত, দুর্গাপুরের স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড অধীনস্ত দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় গত এক মাসের মধ্যে পরপর বেশ কয়েকজন ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ প্লাস্টিক আবর্জনা থেকে তৈরি হবে জ্বালানি, লক্ষ্য গ্রীন আসানসোল
স্বাভাবিকভাবেই ইস্পাত কারখানায় দুর্ঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছিল অন্যান্য স্থায়ী, অস্থায়ী কর্মীদের মনে। তারপর এদিনের এই দুর্ঘটনা আরও বেশি করে প্রভাব ফেলেছে। কারণ কারখানার একজন স্থায়ী কর্মী কনভেয়ার বেল্টে পড়ে সঙ্গে সঙ্গে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছেন। যদিও তার ছিন্নভিন্ন হওয়া দেহটি উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে। তবে বারবার দুর্ঘটনায় কর্মীদের সুরক্ষা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
Nayan Ghosh