উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের যোগী পুকুর গ্রামে থাকেন ৭০ বছরের নারায়ণ সরকার। ছোট থেকেই তাঁর নেশা রাস্তার ধারে ধারে গাছ লাগানো। এ পর্যন্ত নিজের হাতে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি চারা গাছ রোপণ করেছেন। এর মধ্যে আছে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ছাড়াও বট, পাকুর, কদম, নিম সহ সমস্ত ধরনের ফল এবং ঔষধি গাছ। এই সূত্রে বন দফতরের পক্ষ থেকে পেয়েছেন বহু সম্মান।
advertisement
আরও পড়ুন: কালীপুজোর আগে যানজট দূর করতে বনগাঁয় তৎপর পুরসভা
পেশায় কৃষিজীবী নারায়ণবাবু। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। গাছ নিয়ে এই ভালবাসা প্রসঙ্গে নারায়ণবাবু জানান, মনোহরপুর থেকে যোগী পুকুর যাওয়ার ৫ কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে যত গাছ আছে সবই তাঁর হাতে লাগানো! এর মধ্যে অনেক গাছ বেঁচে আছে, আবার অনেকগুলি দুষ্কৃতীরা কেটে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে। তবে এতে তিনি যে হতাশ নন তা পরিষ্কার জানিয়েছেন। বরং গাছ লাগানোর লড়াই আরও জোরদার হয় বলে নারায়ণ সরকারের দাবি। জানান, চোখের সামনে গাছ কাটা দেখলে আর স্থির হয়ে থাকতে পারেন না। এই প্রসঙ্গে সমাজ সচেতনতার বার্তা দিয়ে গাছ পাগলা সাধু বলেন, আগামী প্রজন্মের জন্য সুস্থ পৃথিবী রেখে যেতে হলে আমাদের সকলকে গাছ লাগাতে হবে।
শুধু নিজেই গাছ লাগানোর কাজ করে থেমে থাকেন না নারায়ণবাবু। আশেপাশের বাসিন্দাদের গাছ লাগানোর জন্য রীতিমতো উৎসাহিত করে চলেন।জানান, একটি গাছ থেকে কলম করে হাজারের উপর চারা তৈরি করা যায়। ফলে একটি গাছ থেকে সৃষ্টি হয় অনেক প্রাণের। গ্রামের বিভিন্ন গাছ থেকে কলম করার পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জ শহরের অলিগলি ঘুরে ফেলে দেওয়া আম, জাম, কাঁঠাল সহ বিভিন্ন ফলের বীজ সংগ্রহ করে এনেও তিনি চারা তৈরি করেন।
নারায়ণ সরকারের স্ত্রী অরুণাদেবী বলেন, বিয়ের পর থেকেই দেখছি ও কৃষিকাজ সেরে চলে যায় রাস্তার ধারে গাছ লাগাতে। ওঁর এটা নেশা। ভাল কাজ করছে, তাই বাধা দিইনি। গাছ লাগানোর নেশায় বাড়ির কাছেই ছোট একটা নার্সারি করে ফেলেছে বৃদ্ধ।
পিয়া গুপ্তা