এর আগে আমরা যে সমস্ত ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনা শুনেছি সেখানে সাধারণত, একটি নম্বর থেকে কোনও ব্যক্তিকে ফোন করে তাঁর নম্বরে আসা একটি ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড বলতে বলা হত। তবে এই ঘটনার ক্ষেত্রে একটি মিসড কলই যথেষ্ট ছিল।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পেরেছে যে, এক্ষেত্রে ব্যবহৃত সিমের সিস্টেম সোয়াপ বা বদল করা হয়ে থাকে, এর সাহায্যেই অপরাধী ওই ব্যক্তির ব্যক্তিগত ব্যাঙ্কের তথ্য অ্যাক্সেস করার সুযোগ পায়।
advertisement
অনেকেই হয় তো এই সিম সোয়াপ ফ্রডের ব্যাপারে জানেন না। এর সাহায্যে কেবলমাত্র একটি মিসড কলেই আমাদের অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা চুরি করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: ৬ আসনের সবকটিতে জয়, পঞ্চায়েতের আগে বামেদের জয়জয়কার!
নতুন যুগের মোবাইল ফ্রড?
সিম সোয়াপিংয়ের এই পদ্ধতি সাধারণ ব্যাঙ্কিং ফ্রড থেকে আলাদা কিছু নয়। শুধু এক্ষেত্রে আরও উন্নত টেকনোলজির ব্যবহার ও সাধারণ মানুষের অসাবধানতাকে কাজে লাগানো হয়। সিম সোয়াপ প্রক্রিয়া প্রতারককে আমাদের ফোন নম্বর অ্যাক্সেস করার সুযোগ দেয়।
কীভাবে সম্ভব?
প্রথমত অপরাধী এ ক্ষেত্রে ই-মেল আইডিতে একটি ফিশিং ইমেল পাঠায় যা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে তোলা হয়েছে। এরা আগামী শিকার সম্পর্কে সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য পেতে নানা প্রতারণামূলক কল ব্যবহার করে।
আরও পড়ুন: সরস্বতী পুজো, এখন? কান্দিতে বাণী বন্দনার ঢাকে কাঠি
একবার তাদের কাছে সমস্ত প্রয়োজনীয় বিবরণ চলে এলে, তারা টেলিকম অপারেটরের কাছে ফোন হারানো বা পুরনো সিম নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো কারণ উল্লেখ করে একটি ডুপ্লিকেট সিম ইস্যু করে। টেলিকম সেক্টরে জমা দেওয়া বিবরণ সঠিক প্রমাণিত হলে, প্রতারক আমাদের নম্বরে একটি সিম কার্ড অ্যাকটিভ করতে সক্ষম হয়। এই ক্ষেত্রে মিসড কল প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যদি ডুপ্লিকেট সিমটিই ক্রমাগত সক্রিয় থাকে তাহলে আসল সিমটি কাজ করা বন্ধ করে দেবে এবং টেলিকম কোম্পানি শেষ পর্যন্ত নম্বর ব্লক করে দেবে। এর পর অপরাধী খুব সহজেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর রিকভারি করে লিঙ্ক করা মোবাইল নম্বরে ওটিপি পেয়ে টাকা তুলে নিতে সক্ষম হয়।
সিম সোয়াপ আটকানোর উপায়
১। এর জন্য প্রথমত ব্যবহারকারীদের সচেতন হতে হবে এবং এই ধরনের ফ্রড সম্পর্কে নিয়মিত খবর রাখতে হবে।
২। অজানা কোনও উৎস থেকে প্রাপ্ত ই-মেল একেবারেই খোলা উচিত নয়। যে কোনও লিঙ্ক বা অ্যাটাচ করা ফাইল খোলার আগে সর্বদা ই-মেল আইডির বিবরণ পরীক্ষা করা উচিত।
৩। অ্যাকাউন্টের বিশদ বিবরণ, ই-মেল আইডি বা পাসওয়ার্ড কখনই অজানা কারও সঙ্গে শেয়ার করা উচিত নয়।
৪। যদি সন্দেহ হয় এমন কোনও ট্রানজাকশন বা ফোন কল সম্পর্কে, তাহলে তখনই কর্তৃপক্ষ বা টেলিকম অপারেটরকে সতর্ক করা উচিত।