উনিশ শতকের শেষ দিক থেকেই নিউম্যাটিক টায়ার পৃথিবীকে ঘোরাচ্ছে। বিশ শতকের ৮০ দশকে প্রথম আবির্ভূত হয় ‘রান ফ্ল্যাট টায়ারস’। কিন্তু বাতাস ভরা টায়ার মাঝে মধ্যেই ফেটে যায়। এর ফলে নানা দুর্ঘটনাও ঘটে। ন্যাশনাল হাইওয়ে ট্র্যাফিক সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মতে, শুধু মাত্র ২০১৬ সালেই টায়ারের ত্রুটিজনিত কারণে মোট ৭৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
advertisement
প্রথম সারির টায়ার প্রস্তুতকারী সংস্থা Micheli এক নতুন ডিজাইনের টায়ার নিয়ে আসে— ‘Tweel’। আসলে এটি হল টায়ার এবং হুইল-এর সংমিশ্রণ। এতে থাকে পলিউরেথেন স্পোক।
যেগুলি ওয়েজ বা গোঁজের আকারে সর্বত্র সমানভাবে লাগানো থাকে। এগুলি টায়ারের বাইরের ভর বা বলা ভাল গোটা গাড়ির ভরকে নির্ভরতা দিতে পারে। এই প্রযুক্তিতেই ২০১৩ তৈরি হয়েছে Bridgestone-এর দ্বিতীয় প্রজন্মের নন-নিউমেটিক টায়ার।
আরও পড়ুন- স্মার্টফোন কেনার সেরা ডিল! Flipkart দেবে অবিশ্বাস্য সুযোগ
এর সুবিধা কী, দেখে নেওয়া যাক এক নজরে—
পাংচার-প্রুফ—
বিশেষ উপকরণে তৈরি বলেই নন-নিউমেটিক টায়ার পাংচার হওয়ার সম্ভাবনা কম। রক্ষণাবেক্ষণ প্রায় নেই। ওজন এবং দৃঢ়তার কারণে, এই টায়ারগুলি রাস্তায় আরও ভাল ভাবে গড়াতে পারে। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমে।
স্থায়িত্ব—
এই টায়ারগুলি বেশ টেকসই। ফলে অর্থের সাশ্রয় হয়। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে Toyo Tyre & Rubber Co. Ltd ৭০০ শতাংশ বেশি স্থায়িত্ব-সহ একটি এয়ারলেস টায়ার বাজারে এনেছে।
পরিবেশ বান্ধব—
এয়ারলেস টায়ার তৈরিতে ব্যবহৃত সমস্ত উপাদান ১০০ শতাংশই পুনর্ব্যবহারযোগ্য। এতে কার্বন নির্গমনও কম হবে।
এত ধরনের সুবিধা রয়েছে বলেই প্রথম সারির প্রায় সমস্ত টায়ার নির্মাতা সংস্থাই এয়ারলেস টায়ারের উন্নত সংস্করণ বাজারে আনার কথা ভাবছে। ‘ইউনিক পাংচার-প্রুফ টায়ার সিস্টেম’ বা UPTIS বলে অভিহিত করা এই টায়ার ২০২৪ সালের মধ্যে পরীক্ষার করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে Chevrolet-র সঙ্গে তা পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন- নতুন iPhone 15 কিনেছেন! কীভাবে করবেন ডেটা ট্রান্সফার? রইল খুঁটিনাটি
বাইকারদের জন্যও পুনর্ব্যবহারযোগ্য এয়ারলেস মোটরবাইক টায়ার তৈরির চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই নন-নিউমেটিক স্কুটার টায়ার তৈরি হয়েছে।
সমস্যার—
তবে এই নন-নিউম্যাটিক টায়ারগুলির প্রধান সমস্যা হল গতির অভাব, অতিরিক্ত ওজন এবং ব্যয়বাহুল্য। দক্ষিণ কোরিয়ার এক প্রথম সারির টায়ার নির্মাতা সংস্থা Hankook দাবি করেছে, ২০১১ সাল প্রচেষ্টা চালিয়ে অবশেষে তারা গতির সমস্যা সমাধান করতে পরেছে। একটি বৈদ্যুতিক গাড়িতে এই টায়ার লাগিয়ে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে প্রতি ঘন্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে সেটি।
এই টায়ার নিয়ে এখনও পরীক্ষা চলছে। আশা করা যায় ২০২৪ সালের মধ্যে তা কাজে লাগিয়ে ফেলা যাবে।