দেশদ্রোহী" আখ্যা পাওয়া পাওয়া সুকুর বিতাড়িত হয়েছেন তার নিজের দেশ থেকেই, যে দেশকে প্রথম এবং একমাত্র বারের জন্য বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিয়ে গেছিলেন তিনি। ২০০২ বিশ্বকাপের নায়ক রোনাল্ডো, রোনালদিনহো, কাফু হলেও, তুরস্কের মানুষদের কাছে সুকুর সেই নায়কের জায়গা থেকে এক ইঞ্চিও নিচে ছিলেন না। আমরা কল্পনাও করতে পারি না কোনো তারকা ফুটবলারের এরকম পরিণতি।
advertisement
কিন্তু হাকান সুকুরের কাছে সেটাই বাস্তব। সালটা ২০০২, বিশ্বকাপে জায়গা পেয়েছে আন্ডারডগ তুরস্ক। কারোরই কোনো প্রত্যাশা ছিল না এই দেশটাকে নিয়ে, কিন্তু বিশ্বকে চমকে দিয়ে সেমিফাইনালের মঞ্চে তুরস্ককে নিয়ে গেলেন হাকান সুকুর। তিনি সেই বিশ্বকাপে একটু রেকর্ড করলেন, যেটি আজ অবধি কেউ ভাঙতে পারেননি। ম্যাচ শুরু হওয়ার ১১ সেকেন্ডেই গোল করেন তিনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে করা এই গোলটি এখনও বিশ্বকাপের দ্রুততম গোল। সেই ম্যাচে ৩-২ তে জয় পেয়েছিল তুরস্ক, এবং বাকি দুটো গোলে অ্যাসিস্ট ছিল হাকান সুকুরেরই। বিশ্বকাপ খেলে ফেরার পর তাকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হয়। নায়কের সম্মানে আপ্যায়িত হয়েছিলেন তিনি নিজের দেশে। সুকুর তরস্কের আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা, ১১৩ ম্যাচে ৫১ গোল।
শুধু তাই নয় তার সফল কেরিয়ার কেটেছে ব্ল্যাকবার্ন, ইন্টার মিলান এবং গালাতাসারায় ক্লাবে। নিজের দেশের লিগে ৫৪৫ ম্যাচে ২৯৫ গোল। তার জীবনের সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল রাজনীতিতে যোগ দেওয়া। ২০০৮ সালে তিনি ফুটবল থেকে অবসর নেন, এবং জাতীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন।
এই সিদ্ধান্তের জন্য তাকে হারাতে হয় সবকিছু। সরকার থেকে তাকে দেশদ্রোহী ঘোষণা করা হয়, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জন্য। জাতীয় নায়ক এক মুহূর্তে ভিলেন হয়ে যান। তার বিরুদ্ধে জেল এবং মৃত্যুদন্ডের আদেশ আসে, কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে সেটা হয়নি। বরং দেশ থেকে আজীবনের জন্য বিতাড়িত করা হয় তাকে। পেট চালাতে এখন মার্কিনে উবার চালাতে হয় এই বিশ্বকাপ নায়ককে।