প্রশ্ন: মরুদেশে প্রথমবার আয়োজিত হচ্ছে বিশ্বকাপ। আপনার মনে পড়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ক্রিকেট শুরু হওয়ার দিন গুলি?
আসিফ ইকবাল: আমি ও মিস্টার বুখাতির আটের দশকে যখন মরুদেশে ক্রিকেট শুরু করেছিলাম তখন পরিস্থিতি অনেক আলাদা ছিল। তখন পরিকাঠামো কিছুই ছিল না। সেই সময় ক্রিকেট টাকা-পয়সা অনেক কম ছিল। আমি আর বুখাতির চেষ্টা করেছিলাম ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা যাতে অবসরের পর টাকা পয়সা পায়। গাভাসকার একাদশ ও মিয়াঁদাদ একাদশ দিয়ে ম্যাচ শুরু হয়েছিল। প্রথমে শুধু ভারত, পাকিস্তানকে নিয়ে এসে খেলানোর কথা ভেবেছিলাম। পরে অন্যান্য দেশও আগ্রহ দেখাতে শুরু করে। আজ সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ক্রিকেট পরিকাঠামো দেখলে গর্বিত হই। আধুনিক পরিকাঠামো রয়েছে প্রত্যেকটা মাঠে। কোনদিনও ভাবিনি এখানে বিশ্বকাপ হবে। আজ যেন সার্থক মনে হচ্ছে নিজের কাজকে।
advertisement
প্রশ্ন: এক সময় তো মরুদেশে ম্যাচ হলে গ্যালারিতে আপনার উপস্থিতি চোখে পড়তো প্রতি মুহূর্তে। এবার বিশ্বকাপ দেখার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন?
আসিফ ইকবাল: না আমি আমন্ত্রণ পাইনি। তবে আমন্ত্রণ না পেলে কোনও আক্ষেপ নেই। আপনারা মনে রেখেছেন এটাই প্রাপ্তি। একটা ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরেছিলাম। ইংল্যান্ডে বসে টিভিতে বিশ্বকাপ দেখব।
প্রশ্ন: ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে আপনার ভবিষ্যদ্বাণী কী?
আসিফ ইকবাল: টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। একটা ওভার খেলা বদলে দিতে পারে। তবে এটা বলতে পারি ভারতের অ্যাডভান্টেজ বেশি। দলে একাধিক ম্যাচ উইনার রয়েছেন। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা কম। কাগজে-কলমে ভারত এগিয়ে থাকলেও ম্যাচের দিন যে নিজের সেরাটা দেবে সেই জিতবে। এইসব ম্যাচে নার্ভ ধরে রাখা টাই আসল।
প্রশ্ন: বিশ্বকাপের আগে কোচ বদল। নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড সিরিজ বাতিল করেছিল। সেভাবে প্রস্তুতিও করতে পারিনি পাকিস্তান। দল নিয়ে কী বলবেন?
আসিফ ইকবাল: আশাকরি টুর্নামেন্টের আগের সমস্যা কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না। বাবর আজমের অধিনায়কত্বে ভালো খেলছে পাকিস্তান। তবে দলে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের সংখ্যা কম। ভারতের তুলনায় ম্যাচ উইনার অনেক কম। টপ অর্ডার ভালো করলে আমরা আশা দেখতেই পারি।
আরও পড়ুন: নেটে তিনি থ্রোডাউন স্পেশালিস্ট, পাকিস্তান ম্যাচের জন্য বিরাটদের তৈরি করছেন মেন্টর মাহি
প্রশ্ন: পাকিস্তান প্রত্যেকবার বিশ্বকাপে ভারতের কাছে হেরে যায়। এর কারণ কি মনে হয়?
আসিফ ইকবাল: আমি শুরুতেই বলেছি এইসব হাইভোল্টেজ ম্যাচে নার্ভ যে ধরে রাখতে পারবে সেই জিতবে। পাকিস্তান বিশ্বকাপের আসরে চাপে পড়ে যায় বরাবর। তবে সময় পাল্টেছে আশা করি এই পরিসংখ্যান এক দিন বদলাবে।
প্রশ্ন: সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে খেলায় ভারত না পাকিস্তান কোন দল সুবিধা পাবে বলে মনে হয়?
আসিফ ইকবাল: দেখুন এই প্রশ্নের উত্তরে মনে হয় দুই দলই সমান সুবিধা পাবে। মরুদেশে দীর্ঘদিন পাকিস্তান ক্রিকেট খেলেছে তাই মাঠ এবং উইকেট সম্বন্ধে তারা জানে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ওখানে আইপিএল খেলছে। কিছুদিন আগেই তাদের সব ক্রিকেটাররা ওখানে ম্যাচ খেলেছে। আর সংযুক্ত আরব আমিরশাহির উইকেট অনেকটা পাকিস্তান ভারতের মতই।
প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে শেষবার খেলতে নামছেন বিরাট। ভারত অধিনায়কের কাঁধে বাড়তি চাপ থাকবে বলে মনে হয়?
আসিফ ইকবাল: মনে হয় না বিরাটের কাঁধে বাড়তি কোনও চাপ থাকবে। বিরাটের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার জানে বড় টুর্নামেন্টের আসরে কিভাবে খেলতে হয়। দলের ক্রিকেটারদের থেকে সেরাটা বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা করবে। আশাকরি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের সেরা ফর্মে বিরাট কোহলিকে দেখতে পাবো।
আরও পড়ুন: এদিকে ধোনি, ওদিকে ইমরান! ভারতকে হারাতে এবার বড় ভূমিকায় খানসাহেব
প্রশ্ন: ভারতীয় ড্রেসিংরুমে মেন্টার হিসেবে থাকছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
আসিফ ইকবাল: ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এই সিদ্ধান্তটা দারুণ। জোড়া বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ককে দলের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে ভালো কাজ করেছে। বড় মঞ্চে কি করে সফল হতে হয় ধোনি সেটা জানে। চাপ সামলানো ও কাছে কঠিন কিছু না। ধোনি নিজের আত্মবিশ্বাসটা গোটা দলের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে পারলেই বাজিমাত হয়ে যেতে পারে। মাঠের বাইরে বসে ধোনির পরিকল্পনা ম্যাচের রং বদলে দিতে পারে। মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্যই ভারত ফেভারিট।
প্রশ্ন: ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে এক্স ফ্যাক্টর কী হতে পারে?
আসিফ ইকবাল: আমার মনে হয় টস জিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে অধিনায়ককে। এই সময় অর্থাৎ অক্টোবর-নভেম্বর মাসে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে শিশির ফ্যাক্টর। বোলারদের বল হাতে গ্রিপ করতে সমস্যা হয়। তবে সবকিছু ছাপিয়ে যে দল চাপ সামলাবে সেই এগিয়ে যাবে। তবে যে দল হারবে তারা কিন্তু অনেকটাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়বে।