অসুস্থ যুবকের মা রুমা দোলুই জানান, ছেলে কৃষ্ণেন্দু ছাড়াও দুই মেয়ে রয়েছে তাঁদের। ছোট থেকে লেখাপড়ায় ভালো ছিলেন কৃষ্ণেন্দু৷ তবে ক্লাস এইটে পাস করার পর দিনমজুর পরিবারে অভাবের সংসারের হাল ধরতে স্কুল ছেড়ে নলকূপ বসানোর কাজে যায় সে। এর পরেই ২০১৪ সালের সরস্বতী পুজোর রাতে হঠাৎই ঘুমন্ত অবস্থায় চিৎকার শুরু করে কৃষ্ণেন্দু।
advertisement
তার পর থেকে নিজের মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে বলে জানায় পরিবারের লোকজন । পরে বাবা মা নিজেদের একমাত্র ছেলের চিকিৎসার জন্য একাধিক চিকিৎসক ও হাসপাতালে তাকে নিয়ে যায়। চিকিৎসার খরচ মেটাতে বিক্রি করতে হয় জমি ও দোকান। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানো যায়নি কৃষ্ণেন্দুকে।
আরও পড়ুন: জলাভূমিতে ভেসে উঠল দেহ, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে যুবকের খুনের অভিযোগ
এর মধ্যে মাঝে চার মাস বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে আবার ফিরে আসেন কৃষ্ণেন্দু। অন্যদিকে ছেলে যাতে আগের মতো সুস্থ স্বাভাবিক হয় তাই তাকে বিয়েও দিয়েছিলো বাবা মা। বিয়ের পর কৃষ্ণেন্দুর আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখেই ২ মাস পর চলে যান স্ত্রী।
আরও পড়ুন: হনুমানের মৃত্যুতে মাথা ন্যাড়া, পুরোহিত ও নাপিত ডেকে শ্রাদ্ধ
কৃষ্ণেন্দুর চিকিৎসা করাতে সর্বস্বান্ত পরিবার তাই অগত্যা ছেলেকে ১ বছর ধরে হাতে পায়ে শিকল বেঁধে রেখেছে পরিবার। শিকল বাঁধা অবস্থায় এখন দিন রাত কাটছে কৃষ্ণেন্দুর।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সেভাবে কোনও কিছু করেনা কৃষ্ণেন্দু৷ তবে শিকল খোলা থাকলে মাঝে মধ্যে হঠাৎই তার বাবা দীনেশ দোলুইয়ের উপরে আক্রমণ করেন তিনি। এর আগে দু' একবার বাবার উপর আক্রমণও করেছিলেন তিনি। কৃষ্ণেন্দুর বাবা মা আর পরিবারের সদস্যরা চান, যেভাবেই হোক অন্তত চোখের সামনে থাকুক বাড়ির ছেলে৷ তাই এক বছর ধরে হাতে পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় দিন কাটছে কুলপি জামতলার ছাব্বিশ বছরের যুবক কৃষ্ণেন্দু দোলুইয়ের। পরিবারের আশা, যদি কোনওভাবে তাঁদের ছেলের চিকিৎসা হয় তাহলে হয়তো একদিন বাঁধনমুক্ত হবে কৃষ্ণেন্দু।
Anisuddin Mollah