যা এক বার কিনলে আর প্রয়োজন হবে না নতুন কোনও ক্যালেন্ডারের। ইতিমধ্যেই তার পেটেন্ট ও হয়ে গিয়েছে। যার আবিস্কারক হিসেবে রয়েছেন বীরভূমের সিউড়ির যুবক আত্রেয় ঘোষাল।
advertisement
ছোট থেকেই গণিতে ভাল আত্রেয়। আর এই গণিতে ভাল হওয়ার কারণেই ছোট থেকে বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের মেডেল পেয়েছেন তিনি।সিউড়ির একটি বেসরকারি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে পড়ার পর বর্তমানে জয়পুরের মনিপাল ইউনিভার্সিটির বিএসসি দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন তিনি।
মূলত স্কলারশিপেই চলছে তার পড়াশোনা। প্রথম বর্ষে পড়াকালীন কলেজ থেকে একটি প্রজেক্ট বানাতে বলা হয় সমস্ত ছাত্রকে। গণিতে তুখোড় এই ছাত্রের মাথায় আসে ‘ইনফিনিটি ক্যালেন্ডার’ বানানোর কথা। আর যেমন ভাবা তেমনই কাজ। এই ক্যালেন্ডার তৈরির জন্য গবেষণা ও অঙ্ক কষা শুরু করেন তিনি। প্রায় ৭ দিনের অদম্য প্রচেষ্টায় অবশেষে তৈরি হয় ইনফিনিটি ক্যালেন্ডার।যা দেখাবে অনন্ত কালের দিনক্ষণ।
আত্রেয়র জানায় ,” প্রতিবছর ক্যালেন্ডার তৈরির জন্য প্রায়ই ওয়ান বিলিয়ন পেপার ভারতবর্ষে ব্যবহার হয়।বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করার পাশাপাশি এই পেপার তৈরির মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় গাছ।তাই প্রতিবছর পেপার তৈরির জন্য লাখ লাখ গাছ কেটে ফেলা হয়।এই ক্যালেন্ডার বাজারে এলে গাছ কাটার পরিমাণ অনেকটাই কমবে পরিবেশের ভরসাম্যও রক্ষা পাবে।”
এই ক্যালেন্ডার প্রসঙ্গে সে আরও জানায়, ” মাত্র ১৪ ধরনের ক্যালেন্ডার ব্যবহৃত হয়।যারা মধ্যে ৭ টি থাকে লিপ ইয়ার এর জন্য, আর সাতটি নন লিপ ইয়ারের জন্য। সেই ১৪ টি ক্যালেন্ডার কীভাবে বছরের পর বছর রিপিট হচ্ছে সেটাকে প্রথমে আয়ত্তে আনেন তিনি। তারপর বেশ কিছু গবেষণা এবং অংক কষে অবশেষে তৈরি হয় ছোট্ট এই ইনফিনিটি ক্যালেন্ডার।তারপর এই ক্যালেন্ডারটিকে পেটেন্ট করতে আমায় সাহায্য করেছেন আমার কলেজ ও HOD ডক্টর কল্পনা শর্মা। তাই এর ইনভেন্টর হিসেবে আমার পাশাপাশি নাম রয়েছে ডক্টর কল্পনা শর্মারও।এছাড়াও এর সম্পূর্ণ হিসাব এবং চিন্তাভাবনা আমার হলেও এর রূপদান করেছে আমার দাদা অরিত্র ঘোষাল।আপাতত এটা কার্ডবোর্ড কেটে বানানো প্রজেক্ট রূপেই রয়েছে।তবে পরবর্তীকালে আরও অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্লাস্টিক বা অন্য কোনও জিনিস দিয়ে তৈরি করব যা এই ক্যালেন্ডারের মতই চলবে অনন্তকাল।”
ছেলের এই কৃতিত্বে খুশি মা শ্যামলী ঘোষালও। তিনি আমাদের জানান “ছোট থেকেই ছেলের অংকের প্রতি প্রচন্ড ভালবাসা।এই ধরনের খেয়াল যে এই প্রথম তা নয়। ছোট থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন জিনিস নিয়ে গবেষণা ও করতেই থাকে।তবে এই প্রথম ওর কাজ স্বীকৃতি পাওয়ায় আমি খুব খুশি।আশা করি আগামী দিনে ও আরও নতুন কিছুর আবিষ্কার করবে।” বাড়ির পাশাপাশি তার এই কৃতিত্বকে সম্মান জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারাও।
সৌভিক রায়





