সাইকেল নিয়ে অনেকেই দেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। আবার কেউ কেউ সারা বিশ্ব সাইকেল নিয়ে ভ্রমণ করেছেন। আবার সাইক্লিং পোস্টে অংশগ্রহণ করেন অনেকেই। তবে অভিষেকের সাইক্লিংয়ের সঙ্গে ওইসব সাইক্লিংয়ের অনেক ফারাক। সাইকেল নিয়ে দুর্গম রাস্তায় শুধুমাত্র নিজের লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থেকে এগিয়ে যাওয়া সহজসাধ্য ছিল না। কারণ রাতে তাঁর থাকার জন্য ছিল না হোটেল। রাস্তার পাশে কেউ পানীয় জল এগিয়ে দেয়নি। নিজের কাছে থাকা শুকনো খাবার খেয়েই কেটেছে একাধিক রাত। জল খেতে হয়েছে রাস্তার ধারের জলাশয় থেকে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সাইকেল নিয়ে ট্রান্স হিমালয়ে এতটা দীর্ঘ পথ পাড়ির ইতিহাস বড় একটা নেই। আর সেটাই করে দেখালেন তমলুকের এই ছেলে। এত বড় অভিযান জয় করে কলকাতার বাসা বাড়িতে ফিরেছেন অভিষেক।
advertisement
তিনি জানান, “অধিকাংশ দিন রাতেও সাইকেল চালাতে হয়েছে। চোখ খুলে রাখা যাচ্ছে না, এমন অবস্থায় ধাবায় একটু জিরিয়ে নিয়েছি। তবে দিনে সাড়ে পাঁচ-ছ’ঘণ্টার বেশি বিশ্রাম নেওয়া হয়নি কখনও। সঙ্গে থাকা অক্সিজেন ক্যানে মুখ লাগিয়ে দম নেওয়া। ফের ছুটেছে সাইকেলের চাকা। একাধিকবার পাথুরে রাস্তায় লিক হয়ে গিয়েছে সাইকেল। নিজ হাতে মেরামত করে আবারও নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গিয়েছেন। সাধারণ এনডুরেন্স স্পোর্টসে যিনি সাইকেল নিয়ে বেরোন, তাঁর পাশে একটা সাপোর্টিং কার থাকে। কোনও অসুবিধায় তাঁরা সাহায্য করেন। কিন্তু এই ৩৬০০ কিলোমিটার দুর্গম রাস্তায় আমি সম্পূর্ণ একা ছিলাম৷” দীর্ঘ এই পথ চলায় কোথাও তাপমাত্রা ছিল মাইনাস দশ। কোথাও বা বিয়াল্লিশ ডিগ্রির গরম।
ভয়ঙ্কর চড়াই উতরাই, পাথুরে রাস্তা, পাহাড়ি পথ পেরিয়ে এসছে অভিষেকের সাইকেলের চাকা। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের কমিটি তা জরিপ করেছে নিবিড়ভাবে। দীর্ঘ এ যাত্রায় অভিষেক পেরিয়ে এসেছেন চার-চারটে হাই অলটিচিউড গিরিপথ। সেখানে অক্সিজেন লেভেল নামমাত্র। তাতেও থেমে থাকেনি অভিষেকের সাইকেলের চাকা। আপাতত অভিষেক অপেক্ষায় গিনিস বুক অফ রেকর্ড এর সার্টিফিকেট বাড়িতে পৌঁছানোর। এর আগেও তমলুকের রূপনারায়ণ নদ সাঁতার দিয়ে পার হয়েছিলেন অভিষেক।
Saikat Shee