ঝুমা-ছোট্টুর আলাপ ধীরে ধীরে গড়ায় বন্ধুত্বে, সেখান থেকে ভাললাগা, ভালবাসা! মাত্র ৫ মাসেই একে অপরকে বড় ভালবেসে ফেলে ছোট্টু আর ঝুমা! শেষ পর্যন্ত স্থানীয় ক্লাবের সহযোগিতায় তাঁদের বিয়ে হল! সাতপাক ঘুরে নতুন জীবন, নতুন সংসার শুরু করলেন কপোত-কপোতি! অন্ধকার অলি-গলি থেকে মুক্তি পেয়ে সূচনা হল ঝুমার আলো-ঝলমলে দিনের!
২১ বছরের ঝুমার বাড়ি মুর্শিদাবাদের লালগোলা গ্রামে। বাবা তরুণ ঘোষ। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর অভাবে জেরবার হয়ে পড়েছিলেন ঝুমা, তাঁর দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে কিছু বন্ধুদের এক চক্র তাঁকে পাচার করে যৌনপল্লিতে। অন্যদিকে, মহিষাদলের বাসিন্দা সনাতন দাসের তিন ছেলে ও এক মেয়ে। মেজো ছেলে ছোট্টু দাস, বয়স বছর ২৭! মহিষাদল বাজারেই ছোট্টুর একটি হোটেল রয়েছে! সেখান থেকেই রোজ খাবার যেত মহিষাদল বাজারের যৌনপল্লিতে! খাবার পৌঁছে দিতেন ছোট্টু-ই! তখনই দেখা হয় ঝুমার সঙ্গে! গত পাঁচ মাস ধরে তাঁদের সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়। তাঁরা বিষয়টি স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে জানায়। তারাই ছেলের পরিবার ও পতিতাপল্লীর মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন!
advertisement
আরও পড়ুন: অনাথ আশ্রমে তো কি! হোম কর্তৃপক্ষ জাঁক করে বিয়ে দিল হোমে পালিত অষ্টাদশীর
অবশেষে, সোমবার সন্ধ্যায় দুইহাত এক করার ব্যবস্থা করা হয়। পুরোহিত ডেকে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনেই বিয়ে হয় ঝুমা আর ছোট্টুর। মালাবদল, সিঁদুর দান ও উলুধ্বনি দিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আসরে উপস্থিত ছিলেন ছেলের পরিবার, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: সবংয়ে বিজেপি সমর্থককে খুনের ঘটনায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার তিন
ঝুমা জানান, অন্ধকার জগৎ থেকে সংসার জীবনে পা দিতে পেরে তিনি ভীষন খুশি। পাশাপাশি যুবক ও তাঁর পরিবারও খুব আনন্দিত। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, 'অন্ধকার জগতের এক যুবতীকে সংসার জীবনে পাঠাতে পেরে ভীষন খুশি আমরা। আগামিদিনে সমাজের অন্যান্যরাও যাতে এই ধরনের কাজে এগিয়ে আসেন সেই আহ্বান জানাই।' এই ধরনের চিন্তাভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকার মানুষজন।
Sujit Bhoumik