নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে এই তাঁবুর মধ্যেই এখন পুজোর দিনগুলো কাটছে তাঁদের। শুধুমাত্র জীবিকা নির্বাহের আশায়। কারণ, এখন থেকেই শুরু হয়েছে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। পৌষ-মাঘের হাড় কাঁপানো শীতে সেই রসই একদিন রূপ নেবে মিষ্টি গুড় আর সুস্বাদু পাটালিতে। অন্ধকার রাতে ঘাসের বুকে বনের নীরবতায় এখন কেটে যাচ্ছে তাঁদের দিন-রাত, শুধুমাত্র একফোঁটা রসের আশায়।
advertisement
পুরুলিয়ার কাশীপুর এলাকার বিভিন্ন বনাঞ্চলে খেজুর রস সংগ্রহ করার জন্য নদিয়া থেকে আগত জাহিদ তোফাদার, আলেকজান মল্লিকরা জানান, ‘দুর্গা পুজোর সময় নিজের বাড়িঘর ছেড়ে অন্য জেলায় আসতে মন চায় না। কিন্তু কী করব না এলে তো সংসার চলবে না। কারণ আমাদের কাছে এই সময়টা খুব মূল্যবান সময়। খেজুরের রস থেকে তৈরি গুড় আর পাটালি বিক্রি করে যে রোজগার হয়, তা সারা বছরের খরচের অনেকটাই মেটায়’।
দুর্গম জঙ্গলে অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে চলছে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি
উৎসবের আলো যখন শহর থেকে মফস্বলে ঝলমল করছে তখন এই অদৃশ্য শ্রমজীবীরা তাদের নীরব সংগ্রামে ব্যস্ত। যাদের ঘামে ভেজা হাতেই গড়ে উঠছে আমাদের উৎসবের স্বাদ। প্রতিটি সুস্বাদু পাটালিগুড়ের পিছনে লুকিয়ে থাকে কতশত গল্প, শীতের রাত, বনজীবনের রূঢ় বাস্তবতা, আর একফোঁটা রসের আশায় বেঁচে থাকার নিরন্তর লড়াই।