দীর্ঘ গবেষণার পর, পুরুলিয়া থেকে প্রাপ্ত অতি ক্ষুদ্র এই উদ্ভিদ প্রজাতি আবিষ্কার করেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা। পশ্চিমবঙ্গে আবিষ্কৃত নতুন লিভারওয়ার্ট প্রজাতির উদ্ভিদের নাম দেওয়া হয়েছে সোলেনোস্টোমা বিদ্যাসাগরিয়েনসিস (Solenostoma vidyasagariensis)। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত তিন গবেষকের মধ্যে দু’জন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের। একজন বোটানি ও ফরেস্ট্রির বিভাগীয় প্রধান অমলকুমার মণ্ডল ও অন্যজন ওই বিভাগেরই অধ্যাপক, রশিদুল ইসলাম। তাঁদের এই কাজে সাহায্য করেছেন কলকাতার বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার গবেষক তথা যুগ্ম অধিকর্তা ড. দেবেন্দ্র সিং।
advertisement
আরও পড়ুন: রাত বাড়তেই বাড়ছে ধুপধাপ-ঠকঠক শব্দ! বিশ্বকর্মা পুজোর আগে হলটা কী মেদিনীপুরে! জানুন
জীব বৈচিত্র্য ঘেরা পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়। এই পাহাড়ের মাটিতে জন্মায় একাধিক গাছ। কখনও পর্যটকদের আনাগোনা, আবার বিভিন্ন কারণে নষ্ট হয়ে যায় বিভিন্ন ছোট ছোট উদ্ভিদ। তাই গবেষকদের অনুসন্ধিৎসু মনও ঘুরে বেড়ায় ওই সব জায়গার আনাচকানাচে। আর সেই কারণেই এমন একটি উদ্ভিদ দেখে তা নজর এড়ায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের। দেখার পরই সেটি সংরক্ষণের জন্য নিয়ে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হার্বরোরিয়ামে। চলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
গবেষকদের মতে, পরীক্ষা শেষে প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে যে, নতুন প্রজাতিটি আকারে সোলেনোস্টোমা ট্রাঙ্কাটামের সঙ্গে কিছুটা মিল থাকলেও বেশ কিছু ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি স্বতন্ত্র। সোলেনোস্টোমা বিদ্যাসাগরিয়েনসিসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, স্পোরে বিশেষ ধরনের শৈলবৎ-জালিকাযুক্ত অলঙ্করণ। টিস্যু উন্নত নয়। নেই শেকড়ও।
শরীর দিয়েই এরা খাবার তৈরি করে আবার শরীরের মাধ্যমেই মাটি থেকে জল ও খনিজ সংগ্রহ করে। এরা জন্মায় স্যাঁতসেঁতে ছায়াযুক্ত পরিবেশে। এই আবিষ্কার যেমন পশ্চিমবঙ্গের জীববৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করবে তেমনই বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ ট্যাক্সোনমি ও জীববৈচিত্র্য গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা নেবে বলেই আশা গবেষকদের। তবে গবেষকদের পাওয়া এই বিশেষ উদ্ভিদ প্রজাতির নাম রাখা হয় বিদ্যাসাগরের নামে, যা বিশ্ববিদ্যালয়কে নয়, গোটা বিশ্বের কাছে পশ্চিমবঙ্গের নাম উজ্জ্বল করেছে।