এই ছোট উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বুড়িশোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ঘোষ, হারান দুয়ারি, সঙ্গে সমাজকর্মী ও একটি স্বেচ্ছাসেবী দল। গ্রামবাসীরা জানান, দারিদ্র্য আর অভাবের কারণে এতদিন শিশুদের কাছে শিক্ষার আলো বেশ দূরে ছিল। তাই সকালের প্রথম রোদ উঠতেই শুরু হয় এই পাঠশালা। প্রতিদিন সকালেই দেখা যায় ছোট ছোট বাচ্চারা খাতা, পেন্সিল নিয়ে ছুটে আসছে মাঠে। কেউ শিখছে বর্ণপরিচয়, কেউ সংখ্যার পরিচয়, আবার কেউ প্রথমবার হাতে তুলে নিচ্ছে বই। গরিব, আদিবাসী ও দিনমজুর পরিবারে জন্মানো এই শিশুরাই আজ শিক্ষার আলো দেখতে শুরু করেছে।
advertisement
আরও পড়ুন: পাহাড়পুরের ‘শিয়াল মোড়’, হরবোলা শিল্পীর ডাক আজও কানে বাজে! রইল নামকরণের চমকে দেওয়া গল্প
শিক্ষিকা অপরূপা ঘোষ পাল ও শিক্ষক সুশান্ত পাল বলেন “এদের হাসিই আমাদের সেরা পুরস্কার। কোনও ফি নেই, কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। শেখার আনন্দটাই আমাদের শক্তি।” স্থানীয় চিকিৎসক হারাধন দুয়ারি সহ সমাজকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরাও এই পাঠশালার সঙ্গে যুক্ত। গ্রামেরই এক গৃহবধূও এগিয়ে এসেছেন শিশুদের পাঠদান করতে। তাঁদের একটাই লক্ষ্য, প্রত্যন্ত গ্রামের প্রতিটি শিশুর কাছে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়া। এলাকাবাসীর মতে, এই উদ্যোগ শুধু পড়াশোনা নয়, শিশুদের মানসিক বিকাশ, নিয়মশৃঙ্খলা, এবং সামাজিক সচেতনতা তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এক কথায় এটি শুধুই পাঠশালা নয়, গ্রাম্য সমাজ বদলের নীরব বিপ্লব। এই বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন গোপাল বিশ্বাস। আজ সেই পথ ধরে উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সৌরভ ঘোষরা। যেখানে অনেক জায়গায় শিক্ষা আজ ব্যবসার হাতিয়ার, সেখানে শালবনির বুড়িশোল প্রমাণ করেছে মানুষের ইচ্ছা, মানবতা আর সমবেত উদ্যোগ থাকলে অনেক কিছুই করা যায়। শিক্ষা কখনও বিলাসিতা নয় এটি সবার মৌলিক অধিকার। বসে পড়া শিশুদের মুখের সেই হাসিই জানিয়ে দেয় ‘প্রভাতের পাঠশালা’ শুধু শিক্ষার কেন্দ্র নয়, মানবিকতার সত্যিকারের উদাহরণ।





