মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সন্তু। সমাজের দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়ানোই তাঁর একমাত্র স্বপ্ন। সমাজের দারিদ্র্য, অসহায়তা এসবকে কাছ থেকে দেখে বড় হয়ে উঠেছেন তিনি। একদিন তাই নিজের হাতেই তৈরি করেন ‘অনুবন্ধ সেবা উদ্যান’। শারীরিক সীমাবদ্ধতা তাঁকে থামায়নি, বরং পথ দেখিয়েছে অন্যদের।
advertisement
সন্তু আজ সমাজকর্মী, লেখক, গৃহশিক্ষক এবং দেবগ্রাম তপশিলি জাতি শিশু শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষক। যে মানুষটি নিজেই বিশেষভাবে সক্ষম, সেই মানুষটাই বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য লড়াই করছেন। এটাই তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় পরিচয়। অনুবন্ধ সেবা উদ্যান আজ শুধু একটি সংস্থা নয়, এটি একটি পরিবার, একটি মানববন্ধন। যেখানে প্রতিটি সদস্য সমাজের জন্য সমানতালে কাজ করেন। স্বয়ং সন্তু দাস ৫ বার রক্তদান করেছেন। লক্ষ্য ১০০ বার রক্তদান করা। রাত হোক বা ভোর, যে কোনও সময় রোগীর জন্য রক্ত জোগাড় করে পৌঁছে দেন। প্রয়োজনে ব্লাড ব্যাঙ্ক ঘুরে নিজে হাতে রক্ত নিয়ে ছুটে যান মানুষের পাশে।
সন্তুর নেতৃত্বে এই সংস্থা আজ বস্ত্রদান, শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, বৃক্ষরোপণ, রক্তদান শিবির, ক্যান্সার রোগীদের আর্থিক সহায়তা, বিশেষভাবে সক্ষমদের ট্রাই-সাইকেল প্রদান সহ নানা সচেতনতামূলক শিবির করছে। তিনি একা নন, অনুবন্ধ পরিবারে আছেন আরও বহু মানুষ, যারা তাঁরই মতো সমাজের সেবায় ব্রতী। তাঁদের সকলের পরিশ্রমেই আজ অনুবন্ধ একটি নির্ভরতার নাম।
সন্তু নিজের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সম্প্রতি ‘বেস্ট সোশ্যাল ওয়ার্কার’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। পা বাঁকা, হাঁটতে কষ্ট, তবুও প্রতিদিন তিনি পৌঁছে যান অসহায় মানুষের দরজায়। কষ্ট তাঁকে থামাতে পারে না। কারণ সন্তুর বিশ্বাস, বিশেষভাবে সক্ষম হওয়া জীবনে কোনও প্রভাব ফেলে না। ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বাবা পতিত দাস এবং মা মধুমিতা দাসের আশীর্বাদ নিয়ে সন্তু আজ অনেকের আশ্রয় হয়ে উঠেছেন। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য কাজ করতে চান তিনি। মানুষের পাশে থাকা এটাই তাঁর ইচ্ছা, এটাই তাঁর ধর্ম। সকলের উদ্দেশে তিনি একটাই বার্তা দিতে চান, মানববন্ধনে থাকুন, মানুষের পাশে থাকুন।





