আর সেই প্রস্তুতির সবচেয়ে বড় অংশ, হাতি আর ঘোড়া তৈরি। মাটির, বেতের আর রঙের বিশেষ কারিগরই পারে এগুলো সৃষ্টি করতে। এই অঞ্চলে একসময় অনেকেই এই কাজ করতেন, কিন্তু এখন টিকে আছেন হাতে গোনা কয়েকজন। আর তাদের মধ্যে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন নেপাল পাল। এক হাত অকেজো, তবু মনোবলের সামনে তা কিছুই নয়।
advertisement
মাটির ঘোড়া ও হাতি
সবাই জানে ঘোড়া ও হাতি তৈরি কোনও সহজ ব্যাপার নয়। বাঁশ কাটা, বেত বাঁকানো, মাটির কাঠামো গড়া সবকিছুতেই লাগে দুই হাতের সমান জোর। কিন্তু নেপাল পাল বলেন, “হাতের অসুবিধা আছে, সাহস তো কমেনি।” গ্রামের মানুষ অবাক হয়ে দেখেন কতটা জেদ থাকলে এইভাবে কাজ করা যায়। পৌষ সংক্রান্তির পুজোর জন্য এ বছর তাকে বানাতে হয়েছে অনেকগুলো ঘোড়া ও হাতি। সময় কম, কাজ বেশি তবু তাঁর হাত থামেনি। দিনের পর দিন, ভোর থেকে সন্ধে পর্যন্ত কাঁচামাল থেকে তৈরি হয়ে উঠছে রাজকীয় মূর্তি।
আরও পড়ুনঃ ভরা বিয়ের মরশুম, মন্দিরে মন্দিরে ঘুরছেন ময়নার বিডিও! কারণ জানলে কুর্নিশ জানাতে ইচ্ছা করবে
মাঝে মাঝে হাতের ব্যথা বাড়ে। তবুও মুখে একটাই কথা “পুজোটা আমার না, গ্রামের। তাই থামলে চলবে না।” অবশেষে সব ঘোড়া আর হাতি তৈরি হয়ে গেলে। গ্রামের মানুষের ভিড় নেপাল পালের বাড়িতে। কারও চোখে বিস্ময়, কারও চোখে গর্ব।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এক সময় যাকে বলা হয়েছিল, “এই কাজ আর হবে না”। আজ সেই মানুষটাই গ্রামকে সাজিয়ে তুলেছেন উৎসবের রঙে। হাত কাজ না করলেও মানুষের শক্তি হারায় না। নেপাল পাল আজ তার জীবন্ত প্রমাণ। তিনি শুধু কারিগর নন, তিনি সাহসের প্রতীক।
অকেজো হাতের বদলে মানুষের ভালবাসা আর নিজের ইচ্ছাশক্তিকে ব্যবহার করে তিনি তৈরি করেছেন নিজের পথ, নিজের অর্জন। পৌষ সংক্রান্তির পুজো যখন শুরু হয়, তখন মাটির সেই সুন্দর ঘোড়া ও হাতির দিকে তাকিয়ে সবাই মনে মনে একটাই কথা বলেন “এই মানুষটাই আসল লড়াকু শিল্পী।”





