দেব শিল্পী বিশ্বকর্মা। তাই বিশ্বকর্মা পুজো মানেই উৎসব। আর তাকে কেন্দ্র করেই বছরের সবচেয়ে বড় আয়ের সুযোগ মেলে তাদের হাতে। বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে দাসপুরে বসে এক ঐতিহ্যবাহী মেলা। যুগের পর যুগ ধরে এই মেলা চলছে, যেখানে গ্রামবাংলার মানুষ ভিড় জমায় লোহার তৈরি নানা সরঞ্জাম কেনার জন্য। ঘরোয়া ব্যবহারের জিনিস থেকে শুরু করে কৃষিকাজ ও নির্মাণকাজের সরঞ্জাম—সবই পাওয়া যায় এখানে। ফলে ভিড়ও হয় প্রচুর, আর এই ভিড়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে কামারদের বিক্রিও।
advertisement
আরও পড়ুন: চাষের খরচ কমিয়ে দিল সরকার, এবার মিলবে বিনামূল্যে ১১ রকম সবজি বীজ! জানুন সঠিক আবেদন পদ্ধতি
কুড়োল, কাঁঠালি, কোদাল, বঁটি, দা ছাড়াও কৃষিকাজে ব্যবহৃত নানা রকমের লোহার সরঞ্জাম তৈরি হচ্ছে ব্যস্ত হাতে। শুধু তাই নয়, রাজমিস্ত্রিদের কাজে লাগবে এমন লোহার যন্ত্রপাতিও তৈরি করছেন কামাররা। তাই এখন দিন-রাত এক করে চলছে হাতুড়ির আঘাত, আগুনের লেলিহান শিখা আর লোহা পেটানো।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের এক কামার শিল্পী বাসুদেব রানা বলেন, “আমরা সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য। পুজোয় মেলা বসলেই দোকান দিয়ে এসব মালপত্র বিক্রি করি। এতে শুধু আমি নয়, আমার সঙ্গে যারা কাজ করে তাদের পরিবারেরও রুজি-রুটি জোটে। বছরে দু’তিন দিন এই মেলাতেই মোটা টাকা আয় হয়, আর সেখান থেকেই সারা বছরের সংসার চলে।”
সংসারের চাকা সচল রাখতে বিশ্বকর্মা পুজো-ঘিরে এই আয়ের সুযোগই ভরসা দাসপুরের কামারদের। তাই ঘুমহীন রাত, অগ্নিকুণ্ডের তাপ আর অবিরাম হাতুড়ির শব্দই এখন তাদের সঙ্গী। মেলার দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে ব্যস্ততা। দাসপুরের এই কামারশিল্প শুধু জীবিকার সঙ্গেই জড়িত নয়, বহু প্রজন্ম ধরে চলা এক ঐতিহ্যেরও প্রতীক। বিশ্বকর্মা পুজোর মেলা সেই ঐতিহ্যকে নতুন করে জীবিত করে তোলে প্রতিবছর। আর সেই ঐতিহ্য রক্ষার জন্যই দিন-রাত এক করে কাজ করছেন কামার শিল্পীরা, যাতে মেলায় তাদের হাতের গড়া সরঞ্জাম বিক্রি হয়, আর সংসারে ফেরে সুখের আলো।