মানসিক অসুস্থতার কারণে ছয় বছর আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন এক বৃদ্ধ। ফেরার আশা কার্যত ছেড়ে দিয়েছিল পরিবার। কিন্তু ভাগ্যে যেন অন্য কিছুই লেখা ছিল! তমলুক থানার পুলিশের প্রচেষ্টায় অবশেষে নিজের ছেলে ও নাতির হাত ধরে বাড়ি ফিরলেন পাণ্ডুয়ার বৃদ্ধ স্বপন দত্ত।
আরও পড়ুনঃ হাজার বছরের ‘নীরব সাক্ষী’ আঝাপুরের সাত দেউল! আজও অনেকে জানেন না এই মন্দিরের ইতিহাস
advertisement
স্বপনবাবুর জীবন এক সময় বেশ সুখেই কেটেছে। হুগলির পাণ্ডুয়ার খন্যান এলাকার বাসিন্দা হলেও দীর্ঘদিন কলকাতার পিকনিক গার্ডেনে স্ত্রী উমা ও একমাত্র ছেলে বাপ্পাকে নিয়ে থাকতেন তিনি। জানা যায়, চেন্নাইয়ে একটি বিদেশি বেসরকারি কোম্পানিতে স্বপন চাকরি করতেন। পদ ছিল ক্যাশ কালেক্টরের, বেতনও ছিল বেশ ভাল। নিশ্চিন্তে সংসার চলত। কিন্তু হঠাৎ কোম্পানিটি ভারত থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। চাকরি হারান স্বপন দত্ত। সেই এক আঘাতেই ভেঙে পড়ে তাঁর জীবন। আয় বন্ধ, সংসারে আর্থিক টানাপোড়েন, তার সঙ্গে মানসিক অবসাদ- সব মিলে ধীরে ধীরে তিনি স্মৃতিভ্রষ্ট হতে শুরু করেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, স্বপনবাবু বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। চাকরি চলে যাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ি পাণ্ডুয়ায় থাকছিলেন। ২০১৯ সালের অগাস্ট মাসে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবার অনেক খুঁজেও কোনও হদিশ পায়নি। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন বাড়ির লোকজন। কিন্তু কোনও খোঁজ মেলেনি।
আরও পড়ুনঃ ছাতা মাথায় রান্না, ঘরে ঢুকে যায় সাপ! কালনার এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অবস্থা দেখলে আঁতকে উঠবেন
এদিকে শনিবার রাতের অন্ধকারে তমলুকের আমগেছিয়া গ্রামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক বৃদ্ধ উদ্ধার হন। অসংলগ্নভাবে নানা কথা বলতে থাকলেও জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ধীরে ধীরে নিজের নাম ও ঠিকানা বলতে সক্ষম হন তিনি। তমলুক থানার পুলিশ দ্রুত হুগলি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অবশেষে খোঁজ মেলে নিখোঁজ স্বপন দত্তের।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
৬ বছর পর বাবাকে ফিরে পেয়ে বাপ্পা বলেন, ডাক্তাররা বলেছিলেন বাবা মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। এত বছর ধরে নিখোঁজ থাকার পর বাবাকে আবার জীবিত ফিরে পাব, এটা স্বপ্নেও ভাবিনি। আজ মনে হচ্ছে ঈশ্বর আবার আমাদের জীবনকে ছুঁয়ে দিলেন।