ব্রিটিশ সময়কালে জেলা শাসন করবার জন্য অবিভক্ত মেদিনীপুর শহরে ভবন স্থাপন করে ইংরেজরা। পরাধীন ভারতে তখন ম্যাজিস্ট্রেট ভবন। এই ভবন থেকে প্রশাসনিক নানা কাজ সম্পন্ন করতেন ইংরেজ শাসকেরা। তবে ইংরেজদের এই পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্তি পেয়েছে ভারতবর্ষ। যে ভবন ইংরেজদের ম্যাজিস্ট্রেট ভবন ছিল বর্তমানে সেই লাল ভবন পরিণত হয়েছে জেলা পরিষদ ভবনে। এই লাল বাড়ির আনাচে-কানাচে রয়েছে বিপ্লবের নানা ইতিহাস। রয়েছে অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসক হঠাতে তরুণ তরতাজা যুবকের আত্মবলিদানের কাহিনী। মেদিনীপুর শহরে অবস্থিত তৎকালীন স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন লাল ভবন। বর্তমানে এই ভবন থেকে জেলা পরিষদের অফিস চলে।
advertisement
স্বাধীনতার আগে ১৯৩২ সালে ব্রিটিশ সরকারের আধিকারিকদের বৈঠক চলাকালীন এই জেলা পরিষদ ভবনে বিপ্লবীরা গুলি করে হত্যা করেছিলেন অত্যাচারী জেলাশাসক ডগলাসকে। নেতৃত্বে ছিলেন বাংলা দুই বিপ্লবী প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য এবং প্রভাংশু পাল।জেলাশাসককে হত্যার দায়ে ১৯৩৩ সালে ফাঁসি হয় প্রদ্যোতের। তবে বিপ্লবীদের ভয়ে আর কোনও ইংরেজ শাসক জেলাশাসক হয়ে আসতে চাননি মেদিনীপুরে। ইংরেজ সরকারের স্থাপন করা সেই ভবন এখন জেলা পরিষদের বিশাল ভবন। সেদিনের সেই ব্রিটিশ লাল বিল্ডিং এখন প্রশাসনিক কার্যালয়। একইভাবে জেলা প্রশাসনে তরফে সংরক্ষণ করা হয়েছে ব্রিটিশ সময়ে তৈরি এই প্রশাসনিক ভবনকে। ভবনের সামনে রয়েছে বিপ্লবীদের মূর্তি।
বিপ্লবীদের সেই অমর ইতিহাস স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে জেলা পরিষদ ভবনে। তবে ২০২৩ এ জেলা পরিষদ সভাধিপতিপদে শাসকদলের পক্ষে সভাধিপতি হয়েছেন প্রতিভা মাইতি। ফের জেলা পরিষদ ভবনকে হেরিটেজ করার দাবি তুলেছেন সকলে। ইতিহাসের সাক্ষ্য বয়ে চলা পুরানো সেই লাল ভবনকে হেরিটেজ করার দাবি এবং পুরানো দিনের ইতিহাসকে সংরক্ষণ করে মিউজিয়াম করার দাবি তুলেছেন প্রত্যেকে।যাতে পরবর্তী প্রজন্ম জেলার বিপ্লবীদের কৃতিত্ব সহজে জানতে পারে এবং জেলার গৌরবকে আরও ছড়িয়ে দিতে পারে দেশ-বিদেশে, তার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।
রঞ্জন চন্দ