আসানসোলের বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুজো প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ এর প্রাচীন। এই বাড়ির পুজোয় রয়েছে এক অন্য রকম নিয়ম। সাধারণত এই নিয়ম দেখা যায় না কোথাও। তবে এই বাড়ির সদস্যরা নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন।
মা দুর্গাকে বিদায় জানানোর আগে থাকে দোলা বিসর্জন। তার পর এখানে বাড়ির সকল সদস্যরা মুখে নিয়ে থাকেন মাছ পোড়া। বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির সদস্য অলোকময় ও সতীনাথ বলেন “পুজোর পাঁচটা দিন খুব আনন্দের সঙ্গে কাটাই আমরা। দুর্গাপুজোয় বাড়ির কোনও এক সদস্যকে পুজোয় বসতে হয়। সেই রীতি চলে আসছে বংশ পরম্পরায়। সাবেকিয়ানাত ধাঁচে এই প্রতিমা পূর্বপুরুষ থেকে হয়ে আসছে”।
advertisement
আসানসোলের গারুই গ্রাম। যে গ্রামে রয়েছে প্রাচীন কিছু নিদর্শন। লোকে এক নামেই চেনে বহু বছর ধরে। এই গ্রামেই রয়েছে প্রাচীন কিছু দুর্গাপুজো ও বিষ্ণু মন্দির। সেই প্রাচীন পুজোর মধ্যে অন্যতম বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজো। এই পুজো শুরু হয়েছিল প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ বছর আগে। তবে এই পুজোয় রয়েছে অন্য নিয়ম। যা সাধারণত বনেদি বাড়িতে দেখা যায় না। এ বাড়িতে বিজয়া দশমীর সকালে দোলা বিসর্জনের পরে পরিবারের সদস্যরা পোনা মাছ পোড়া মুখে নেন। বিকালে প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। এই রীতি হয়ে আসছে বংশ পরম্পরা ধরে। সম্পূর্ণ সাবেকিয়ানা ডাকের সাজে প্রতিমা তৈরি হয় এই বাড়িতে। পুজোর পাঁচটা দিন এখানে থাকে বিশেষ ভোগের আয়োজন। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় অন্ন ভোগে সাত রকমের ভাজা, ডাল, কচু, কুমড়ো ও পুঁই শাকের তরকারি, পালং শাক, পায়েস ও আম অথবা টম্যাটোর চাটনি। এই একই ভোগ নিবেদন করা হয় সপ্তমী এবং নবমীতে।
আরও পড়ুন : দুর্গাপুজোয় মিলন পার্বণের আবহে একান্নবর্তী পরিবারের রূপ নেয় চট্টোপাধ্যায় পরিবার
অষ্টমীতে কোনও অন্নভোগ হয় না, তাই বিভিন্ন ফল, সুজি, লুচি এবং বাড়িতে তৈরি করা টানার নাড়ু ও নারকেল নাড়ু, তৈরি করে ভোগ দেওয়া হয়। দশমীতে বাহারি ফল, মিষ্টি, নারকেল নাড়ু দিয়ে মাকে ভোগ দেওয়া হয়। দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের ঠিক আগেই সিঁদুরখেলার রেওয়াজ রয়েছে সঙ্গে বাড়ির সদস্যরা একে অপরকে হাতে হলুদ মুড়ি দিয়ে থাকেন। তাই এই বনেদি বাড়ির পুজোর স্বাদ নিতে গেলে আপনাকে একটি বার হলেও ঘুরে আসতে হবে আসানসোলের এই গ্রামের বাড়ির পুজোতে।