পূর্ব বর্ধমান জেলার গঙ্গাপাড়ের মন্দির শহর কালনা। এই শহরের মোট ওয়ার্ড ১৮ টি। জনসংখ্যা ৬০ হাজারের কাছাকাছি। এছাড়া দৈনন্দিন নানা কাজে, চিকিৎসার প্রয়োজনে আশপাশের গ্রাম অঞ্চলের বাসিন্দাদের আসতে হয় এই শহরে। বৃষ্টি হলেই অথৈ জলে পড়তে হয় সকলকেই।
দীর্ঘদিনের জল যন্ত্রনা থেকে এবার মুক্তি চান শহরের বাসিন্দারা। শহরের বাসিন্দা গৌরব দে, মিনতি দে, নমিতা বৈরাগ্য, আশিস নন্দনরা বলছেন, বেহাল নিকাশির কারণে নর্দমার জল ঘরে ঢুকে যায়। শিশুদের স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বছরের একটা বড় সময় দুঃসহ পরিবেশে দিন কাটাতে হয়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।
advertisement
আরও পড়ুন- চুপির চর ও সংলগ্ন অঞ্চলে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা এক লাফে ১৫ হাজার বাড়ল এ বছর
কেন সমস্যা? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহরের আকৃতি অনেকটা বাটির মতো। চারপাশ উঁচু। মাঝখান নিচু। তাই বৃষ্টি হলেই জল জমে শহরে। এই শহরের জল নিকাশের মূল দুটি পথ। একটি অংশ যায় গঙ্গায়। অন্য অংশ নালার মাধ্যমে শহরের বাইরে দিয়ে বয়ে চলা বেহুলা নদীতে গিয়ে মেশে। জল বাড়লে আবার বেহুলা ফুলেফেঁপে শহর ভাসিয়ে দেয়। ডুবে যায় পথঘাট।
বাসিন্দারা বলছেন, আগে এই শহরে প্রচুর পুকুর-ডোবা ছিল। বৃষ্টির জল নিকাশি নালার মাধ্যমে সেইসব জলাশয় গিয়ে পড়ত। সেই সব জলাশয়ের অনেকগুলিই এখন ভরাট হয়ে গিয়েছে। সংস্কারের অভাবে মজেও গিয়েছে অনেক জলাশয়। ফলস্বরূপ বৃষ্টি হলে জল বের হওয়ার পথ পাচ্ছে না। তীব্র হচ্ছে নিকাশি সমস্যা।
টানা বৃষ্টি হলেই এই শহরের ৭, ৮, ৯, ১২, ১৩, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা জলের তলায় চলে যায়। বৈদ্যপুর মোড়, আমলা পুকুর, মহিষমর্দিনী তলা, মেডিসিন কমপ্লেক্স, এসটিকেকে রোডের একাংশ হাঁটুসমান জলের তলায় চলে যায়।
স্বাভাবিকভাবেই ভোট প্রচারে নিকাশি সমস্যাকে ইস্যু করছে বিরোধীরা।বিজেপির কালনা নগর মণ্ডলের সভাপতি সৌরভ রায় বলছেন, তৃণমূল এই সমস্যা মেটাতে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। তার ফলে সমস্যা আরও জটিল হয়েছে।
আরও পড়ুন- সংকটে লাইফলাইন, বাঁকা নদী তাই অন্যতম ইস্যু বর্ধমানের পুরভোটে
অস্বস্তিতে শাসক দল তৃণমূল। ভবিষ্যতের মাস্টার প্ল্যানের আশ্বাস দিচ্ছে তারা। কালনা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তপন পোড়েল বলেন, তৃণমূল পরিচালিত পুর বোর্ড অনেক কাজ করেছে। সুষ্ঠ নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তুলে সমস্যার সমাধানে এবার অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।