হলদিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গিরিশ মোড় এলাকার বাসিন্দা ভোলানাথ বেরার মেয়ে দীপাঞ্জলি বেরা। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী দীপাঞ্জলির স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। ২০১৬ সালে ১৭ বছর বয়সে ইউক্রেনের রাজধানী কিভ শহরে যায় ডাক্তারি করার জন্য। বর্তমানে তিনি কিভ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির মেডিসিন বিভাগের ষষ্ঠ বর্ষের ছাত্রী। সামনে ছিল তাঁর ডাক্তারির ফাইনাল পরীক্ষা। দুমাস পর ডাক্তারির ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতির (War in Ukraine) কারণে আটকে পড়েছে কিভ শহরে। দীপাঞ্জলি ফোনে বাড়ির লোককে জানিয়েছে মাথার উপর দিয়ে উড়ছে যুদ্ধবিমান। বোমার আঘাতে ধ্বংস হচ্ছে শহর। বাইরে বেরিয়ে আসা যাচ্ছে না, বর্তমানে বাঙ্কারে রয়েছে সে। বাংকারে ভয়ানক ঠান্ডায় দিন কাটাচ্ছে তাঁর মতো অনেকেই। চারিদিকে আতঙ্কের পরিবেশ।
advertisement
দীপাঞ্জলির মা মৌসুমী বেরা বলেন, "দীপাঞ্জলি ১৭ বছর বয়সে ইউক্রেনে (War in Ukraine) যায় ডাক্তারি পড়ার জন্য। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিল দীপাঞ্জলি। দুমাস পর ডাক্তারি পড়া শেষ করে বাড়ি ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু এই যুদ্ধের মধ্যে আটকা পড়েছে ইউক্রেনের রাজধানী কিভ শহরে। বাংকারে আশ্রয় নিয়েছে, বাইরে বেরিয়ে আসার উপায় নেই। তাই সবসময় দীপাঞ্জলির সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। দীপাঞ্জলি বাড়ি ফিরে আসতে চাইছে। মেয়ে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে রয়েছে। চিন্তায় আমাদের ঘুম উড়েছে।"
চোখের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পড়তে গিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সম্মুখ আটকা পড়েছে দীপাঞ্জলির মতো পশ্চিমবঙ্গের অনেক ডাক্তারি পড়ুয়া। চিন্তায় উদ্বিগ্ন হচ্ছে পরিবারের লোকজন। খাওয়া দাওয়া ভুলে টিভির পর্দায় চোখ রেখেছেন বাবা-মা। দীপাঞ্জলির বাবা চাইছেন, তাঁর মেয়ের মতো যাঁরাই ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে আটকে পড়েছে তাঁদের উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিক ভারত সরকার। তিনি বলেন, "ডাক্তারি পড়া শেষ করে দুমাস পর মেয়ের ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই এই যুদ্ধ শুরু হওয়ায় কিভে আটকে পড়েছে মেয়ে। মেয়ের কথা অনুযায়ী কিভের পরিস্থিতি ভালো নয়। আতঙ্ক গ্রাস করছে সবার মনে। মেয়ে বাড়ি ফিরতে চাইছে। মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি আমার মেয়ের মতো সমস্ত ভারতীয়কে উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হোক।"