তৎক্ষণাৎ তাকে সবং গ্রামীণ হাসপাতাল, পরে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতিকরা হয় তাকে। সেখানে হয় অস্ত্রোপচার, তবে প্রায় এক সপ্তাহের লড়াইয়ে অবশেষে হার মানলেন তিনি। তবে এরপর পরিবার যা সিদ্ধান্ত নিল, তা সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত। প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় থেকে এমন এক সাহসী সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলে।
advertisement
মায়ের মৃত্যু হয়েছে পথ দুর্ঘটনায়। কলকাতার এসএসকেএম-এ ট্রমা কেয়ার ইউনিটে ভরতি থাকা এই মহিলার ব্রেন ডেথ হওয়ার পর পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় অঙ্গদানের। চিকিৎসকদের পরামর্শ মত প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার এই পরিবার মৃত মহিলার অঙ্গদান করার সিদ্ধান্ত নেয়। অবশেষে সেই প্রক্রিয়ার পর মৃত ওই মহিলার কর্নিয়া, কিডনি, লিভার সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয় অন্যের শরীরে। হয়ত তিনি তার পরিবারকে ছেড়ে চিরতরে বিদায় নিয়েছেন, তবে বেঁচে রইলেন বেশ কয়েকজনের শরীরে। তিনি মরেও যেন মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন।
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
চলতি মাসের ১২ জানুয়ারি, স্বামীর সঙ্গে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বাইক থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। তবে এক সপ্তাহর চিকিৎসা এবং লড়াইয়ে তিনি পরাজিত হন। ব্রেন ডেথ ঘোষণা হওয়ার পর ১৯ জানুয়ারি পরিবার অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেয়। কলকাতার এসএসকেএম-এ হয় সেই প্রক্রিয়া। বেশ কয়েকটি হাসপাতালে একাধিক রোগীদের দেওয়া হয় অঙ্গ। একদিকে যেমন শহর কলকাতা এক অঙ্গদানের সাক্ষী রইল, তেমনই জেলায় দুই পরিবারের এই সাহসী সিদ্ধান্ত। মৃত ওই মহিলার নাম সুজাতা মণ্ডল (৪৭) , বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং ব্লকের সিঁদুরমুড়ি গ্রামে।
আরও পড়ুন: কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে গিয়ে হতাশ পর্যটকরা! বন্ধ থাকছে এই ভিউ পয়েন্ট! পাহাড়ে যাওয়ার আগে জানুন
প্রত্যন্ত গ্রামের সামান্য কৃষক পরিবার। সাদামাটা পরিবারে এমন এক সাহসী সিদ্ধান্ত। চিকিৎসকদের পরামর্শ মত, মরণোত্তর দেহদানের সিদ্ধান্ত স্বামী এবং ছেলের। মনে কষ্ট চেপে রেখে আরও মানুষের প্রাণ বাঁচানোর অঙ্গীকার নিয়ে মায়ের অঙ্গ দান করেন ছেলে। যে গ্রামে এখনও হয়ত শিক্ষার আলো ঠিকমতো পৌঁছায়নি সেই গ্রামেই এক গৃহবধুর মৃত্যু প্রমাণ করল সামাজিক দায়বদ্ধতাকে। মরেও যেন তিনি বেঁচে রইলেন সকলের কাছে, নতুন জীবন দিলেন বেশ কয়েকজনকে।
রঞ্জন চন্দ