বছরের পর বছর অজয়ের ভাঙনে হারিয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি, চাষের জমি। বর্ষায় যখন নদী ফুলেফেঁপে ওঠে, তখন গ্রামবাসীদের আরও সমস্যায় পড়তে হয়। গ্রামবাসী বিকাশ দাস এই প্রসঙ্গে বলেন, “গ্রামের বাড়িঘর ভেঙে যাচ্ছে। যাতায়াতে চরম অসুবিধা, রাত্রি হলে পারাপারের অসুবিধা হয়। কারও রোগবালাই হলে যাতায়াত করতে পারছে না। এই কারণেই যে যে পারছে গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে। যাদের উপায় নেই তাঁরাই শুধুমাত্র গ্রামে থাকছে।”
advertisement
বেগুনকোলায় যেন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। গ্রামের কিছু কিছু জায়গাতেই কেবল ঢালাই রাস্তা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বেহাল। গ্রামবাসীদের বাইরের জগতের সঙ্গে সংযোগের একমাত্র ভরসা শুধুমাত্র নৌকা। তবে সেটাও সন্ধ্যার পর বন্ধ হয়ে যায়। ফলে রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় গ্রামবাসীদের।
এসবের জেরে গত তিন দশক ধরে নিঃশব্দে খালি হচ্ছে বেগুনকোলা। বহু পরিবার অন্যত্র স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে। যারা এখনও রয়েছেন তাঁদের অধিকাংশই আর্থিকভাবে দুর্বল, তাই বাধ্য হয়ে থেকে গিয়েছেন। এখন গ্রামজুড়ে পড়ে আছে ভাঙাচোরা, ঝোপজঙ্গলে ঢাকা পরিত্যক্ত একাধিক বাড়িঘর। আজও সেগুলি একসময়ের জনবহুল গ্রামের হারিয়ে যাওয়া দিনের সাক্ষী।
গ্রামবাসী তথা নবগ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য অঞ্জলি দাস জানিয়েছেন, “নদী পারাপার করতে সত্যিই খুবই সমস্যা হয়। এই পারাপারের সমস্যার জন্যই আরও বেশি লোক পালিয়ে যাচ্ছে। যদি ব্রিজ তৈরি হয় ও ভাঙন রোধ করা যায় তাহলে মানুষ আবার গ্রামে ফিরে আসবে।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বন্যার সময় বা ভোট এলেই প্রতিশ্রুতির বন্যা হয়। নদীভাঙন রোধ হবে, রাস্তা হবে, সেতু হবে এমন আশ্বাস শোনা যায়, কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয় না। তাঁদের একটাই দাবি, অজয় নদের উপর একটি স্থায়ী সেতু এবং নদীভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা হোক। তাহলেই হয়তো বেগুনকোলা আবার ফিরে পাবে তার হারিয়ে যাওয়া প্রাণ, ফিরে আসবে গ্রাম ছেড়ে যাওয়া মানুষজনও।





