বোলপুরে কোপাই নদী সংলগ্ন কমলাকান্তপুর গ্রামেই কোঁড়া জনজাতির বসবাস।কোঁড়া ভাষার কোন হরফ বা লিপি নেই। পাশাপাশি নতুন প্রজন্ম বর্তমানে বাংলা ভাষাতেই পড়াশোনা করে। ফলে চর্চার অভাবে নিশ্চিতভাবে বিপন্ন প্রায় এই ভাষা।সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসা এই ভাষাকে নিয়েই শান্তিনিকেতনে এসে প্রায় পাঁচ মাস ধরে গবেষণা শুরু করে মুম্বইয়ের বাসিন্দা অভ্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায়। যিনি তথ্যচিত্রটির প্রযোজক। সোয়েব আজম, অর্ক দে-সহ অন্যরা স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন। উল্লেখ্য, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই মুহুর্তে ভারতবর্ষে প্রায় ১৯৭টি বিপন্ন প্রায় ভাষা।
advertisement
আরও পড়ুন: জেলাশাসকের এক পদক্ষেপ হাসি ফোটাবে তাঁত শিল্পীদের মুখে, স্বাধীনতা দিবসেই হাতেনাতে মিলবে ফলাফল
পাঁচটি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত ভাষা। জাতিসংঘের চিহ্নিত করা বিলুপ্তপ্রায় ভাষাগুলির মধ্যে অন্যতম এই কোঁড়া ভাষা। এই ভাষার আরও কয়েকটি নাম কোরালি, কোডা, কোরে প্রভৃতি। বোলপুর শান্তিনিকেতন কোপাই নদী সংলগ্ন কমলাকান্তপুর গ্রামে প্রায় ৫০টি, কোঁড়া জনজাতি পরিবারের বসবাস। বর্তমানে গ্রামের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই কোঁড়া ভাষায় কথা বলতে পারে না। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা শেখেইনি এই ভাষা। কারণ তাঁরা প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ-বিদ্যালয়, কলেজে বাংলা ভাষা নিয়েই পড়াশোনা করে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
নিজেদের ভাষায় সাংস্কৃতিক উৎসব তেমন হয়ই না। তাই চর্চা কমেছে দিন দিন। গ্রামের ছাত্র ছাত্রীরা বলেন, “নতুন প্রজন্ম বাংলা নিয়েই পড়াশোনা করে, কথা বলে, চর্চা করে। তাই হারিয়ে যাচ্ছে এই ভাষা।” গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, “আমরা এই ভাষাতেই কথা বলি। কিন্তু, ছেলেমেয়েরা বলতে পারে না। আমরা চেষ্টা করছি ভাষাটাকে বাঁচিয়ে রাখার। অন্যদিকে পরিচালক জানান, “তথ্যচিত্রটির মূল উদ্দেশ্য হারিয়ে যেতে বসা এই কোঁড়া ভাষাকে বাঁচানো। তথ্যচিত্রটি স্থান পেয়েছে সূদুর কানাডার ডক্সা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে।” আগামী প্রজন্মের কাছে এই ভাষা বাঁচিয়ে রাখতে এই যে প্রয়াস সেটা কতটা সাফল্য আনতে পারে এখন সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে সাধারণ মানুষ।
সৌভিক রায়