চারিদিকে যখন পঞ্চায়েত সদস্য থেকে নেতা-নেত্রীদের বাড়ি ঝাঁ চকচকে, বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকে প্রাইভেট কার। সেখানে অবশ্য এই পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি দেখে আপনি একটু ভ্রু কুঁচকাবেন। এটা কোনও গল্প নয়, দুবারের পঞ্চায়েত প্রধানের সহজ সরলতার উদাহরণ। যার বিরুদ্ধে নেই কোনও দুর্নীতির অভিযোগ।
আরও পড়ুন- মামাকে দিয়ে হারিয়েছিলেন শুভেন্দু, কী হয়েছিল হলদিয়ায়? দল বদল করে এবার জবাব দিতে চান তা
advertisement
রাজনৈতিক রঙ দেখে তিনি কোনও কাজ করেন না, আবার নিজের পকেট ভর্তিও তাঁর উদ্দেশ্য নয়। সামান্য ভাতার টাকায় চালান সংসার, এভাবেই দিন গুজরান করছেন দুবারের পঞ্চায়েত প্রধান। তৃণমূলের এই প্রধানের সততা নিয়ে প্রশংসা বিরোধী দলেরও।
গরিবের ঘর যেমন হয়, তেমনই ঘর দুবারের তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান ফিদি মূর্মুর ঘটটুকু। ভাঙাচোরা এই ঘরের দেওয়ালের অধিকাংশই ধ্বসে গিয়েছে কোন কালে। চারদিকে কয়েকটা বাঁশের খুটির উপর ভর করে টিকে আছে চালাটুকু। বাঁশের ঠেকায়ও ঘুন ধরেছে। বিলাসবহুল নয় বরং সাদাসিধে দিন যাপন এই পঞ্চায়েত প্রধানের। যা সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত।
আবাস যোজনার ঘর পেলেও স্বামীর মৃত্যুর পর তা আর সম্পূর্ণ হয়নি। সংসার চালাতেই ভরসা তার ভাতার টাকা।পশ্চিম মেদিনীপুরের বাংলা ওড়িশা সীমানা লাগোয়া মোহনপুর ব্লকের নীলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বামুনিয়া এসটি পাড়ার ঘর তার। নীলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুবারের প্রধান ফিদি মুর্মু।
আরও পড়ুন- সুখবর! বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য এবার কাজের সুযোগ, বিরাট আয়োজন ‘এই’ জেলায়
২০১২ এবং ২০২৩ থেকে বর্তমানে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। সকাল থেকে উঠে ঘরের নিত্য কাজ করে যান অফিসে। আবার ফিরে এসে ভাঙাচোরা বাড়িতে তিন মেয়েকে নিয়ে সংসার তাঁর। সামান্য এটুকু ঘরে কীভাবে রাখবেন মেয়েদের? এক মেয়েকে অবশ্য তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন বাপের বাড়ি, আরেকজন হোস্টেলে।
ছোট মেয়েকে নিয়ে এই ভাঙা ঘরে থাকেন তিনি। ২০২২ সালে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়। আবাস যোজনায় ঘর পেলেও প্রথম কিস্তির টাকায় সামান্য কিছুটা ঘর করলেও স্বামীর মৃত্যুর পর অর্থের অভাবে তা আর করতে পারেনি। তবে সামান্য এই ঘরে ঢোকেনি দুর্নীতির হাওয়া।
যখন একের পর এক নেতার নামে দুর্নীতির খবর কিংবা ভুরি ভুরি অভিযোগ, সেখানে অবশ্য বিরোধীরাও বাহবা জানান এই পঞ্চায়েত প্রধানকে। তিনি অল্পতেই খুশি। দরকার নেই চাকচিক্য থেকে রাজপ্রাসাদ। ভাঙা ঘরে থেকেও মানুষের সেবা করাই তাঁর উদ্দেশ্য। অনুপ্রেরণা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পঞ্চায়েত প্রধান হলেও তাঁর আদর্শ এবং অসীম সাহস সকলের কাছে অনুপ্রেরণা।
রঞ্জন চন্দ