নিকাশি নালার পাইপলাইন পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে একজন নেমেছিলেন। কিন্তু তিনি উঠছেন না দেখে বাকি দু’জনও নেমে পড়েন। তিনজনের কেউ আর নিকাশি নালার ভিতর থেকে ওঠেননি। ম্যানহোল বা নিকাশি নালায় মানুষ নামিয়ে কাজ ২০১৩ সালে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ কি মানা হয়েছিল? উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: সড়কপথে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার টিকিট কেটেছেন? বন্ধ থাকছে যোগাযোগকারী ‘এই’ সেতু, ব্যাপক সমস্যা পড়তে পারেন
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতরা হল হাসিবুর রহমান (৩০) ও ফরজেম সেখ (৬০)। মাস দু’য়েক আগে কলকাতায় পাইপ লাইনের কাজের জন্য যায় লালগোলা থেকে। প্রতিদিনের মত রবিবার সকালে ফোন করেছিল বাড়িতে ফরজেম সেখ। বেশ কিছুক্ষণ ধরে কথাবার্তাও হয়। দিন চারেকের মধ্যে বাড়ি ফিরে আসার কথা বলেছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেল অঘটন। অন্যদিকে টিভি দেখেই জানতে পারে দুর্ঘটনার কথা।
মৃতের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “পাইপ লাইনের কাজ করত। এইভাবে দুর্ঘটনা ঘটে যাবে বুঝতে পারিনি। এই এলাকায় কাজ না থাকায় বাইরেই কাজ করতে যেতে হত। আজকে সকালেও ফোন করে জানিয়েছিল কয়েকদিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরে আসবে।” স্ত্রী আসরা ফুলন্বেষা বলেন, “সকাল বেলাতে জানতে পারি মৃত্যুর কথা। এখন চাই দেহটা যেন বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কাজে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। এই এলাকায় কাজ না থাকায় বাইরেই কাজে যেতে হয়। অন্যদিকে হাসিবুর রহমানের বাড়িতেও কান্নার রোল। এক মেয়ে ও স্ত্রী ও বৃদ্ধ মা বাড়িতে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে কলকাতায় ম্যানহোলের কাজ করে হাসিবুর।”
স্ত্রী নার্গিস খাতুন বলেন, “আজকে আর ফোনে কথা হয়নি। পরিচিত একজনকে ফোন করি, জানতে পারি দুর্ঘটনার কথা। আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। সংসারের একমাত্র রোজগেরেই ছিল আমার স্বামী। কি করে চলবে তা আল্লাই জানে।” এলাকার সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ঐ দুই পরিবার যাতে সরকারি ভাবে সাহায্য পায় তার জন্য চেষ্টা করা হবে। এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষই পরিয়ায়ী শ্রমিকের কাজ করে।”
জানা গিয়েছে, বানতলার ট্যানারির পাইপলাইন পরিষ্কার করতে নেমে সাতসকালে তিন সাফাইকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। লেদার কমপ্লেক্সের থানার অন্তর্গত বানতলায় মৃত্যু হয়েছে কেএমডিএ’র তিনজন সাফাইকর্মীর। ইতিমধ্যেই তাঁদের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ট্যানারির বর্জ্যের দুর্গন্ধে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজন শ্রমিকের। কলকাতা পুরসভা এই তিনজনকে সাফাইয়ের কাজে নিয়োগ করেছিল। দের ময়না তদন্তের দেহ ফিরে আসার অপেক্ষায় পরিবারের সদস্যরা।
কৌশিক অধিকারী