এই মন্দির কুব্জিকা তন্ত্র অনুযায়ী ৪২ টি শক্তিপীঠের ১ টি শক্তিপিঠ। কথিত আছে এখানে সতীর ছাতি বা ছত্র পড়েছিল, সেজন্য এই এলাকার নাম ছত্রভোগ। আগে ত্রিপুরার রীতিমেনে এই মন্দিরে পুজো হত। বর্তমানে ব্রাহ্মন্য রীতি মেনে এই মন্দিরে পুজো হয়। এই মন্দিরে ত্রিপুরাসুন্দরীর সঙ্গে শিব নেই। শিব থাকেন বড়াশিতে। পৌরানিক মতে ত্রিপুরাসুন্দরীদেবীর এই বরাভয় মুর্তি হিন্দুধর্মে প্রসিদ্ধ।
advertisement
আরও পড়ুন: গ্রামের রাস্তায় রয়েল বেঙ্গলের পায়ের ছাপ! আতঙ্কে কাঁপছে আট থেকে আশি
ধর্মীয় রীতি বাদ দিলে এই মন্দিরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক। ত্রিপুরা রাজ্যের সর্বপ্রাচীন গ্রন্থ রাজমালাতে এই মন্দিরের উল্লেখ আছে। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী রাজা জজাতির পুত্র দুহ্য শাপভ্রষ্ট হওয়ার পর শাপমুক্তির লক্ষ্যে কপিলমুনির আশ্রমে এসেছিলেন। তাঁরই বংশধর পতদ্রুন কিরাত এই এলাকায় ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। পরে তাঁর বংশধররা ত্রিপুরায় চলে যান।কথিত আছে মহাপ্রভু চৈতন্যদেব নীলাচলে যাওয়ার সময় কয়েকদিন ছত্রভোগে থেকে ছিলেন।
আরও পড়ুন: এই শিল্পীর হাত ধরেই কথা বলেন দেবী দুর্গা-কালী, দেন সচেতনতার পাঠ
প্রাচীন এই মন্দিরটি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে একাধিকবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মন্দিরের প্রাচীন ইতিহাস জানতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মন্দির সংলগ্ন এলাকায় খনন কাজ চালানো হয়। সেখান থেকে বহু প্রাচীন মূর্তি ও প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী উদ্ধার হয়েছিল। বর্তমান মন্দিরের তলায় প্রাচীন মন্দিরের অবশিষ্টাংশ এখনও রয়েছে বলে মত প্রত্নতাত্ত্বিকদের।
এ নিয়ে স্থানীয় প্রত্নতাত্ত্বিক দেবী শংকর মিদ্যা জানিয়েছেন, মন্দিরের ইতিহাস যে সুপ্রাচীন সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে মন্দিরটি নিয়ে আরও গবেষণা করার প্রয়োজন রয়েছে। এই মন্দির চত্বরে খনন কাজ চালানো হলে ভবিষ্যতে আরও নতুন কিছু উঠে আসবে। ত্রিপুরার সঙ্গে এই এলাকার সংযোগ এ নিয়েও নতুন দিকের আলোকপাত হবে।তবে ইতিহাস যাই হোক না কেন, এই মন্দিরের মা ত্রিপুরা খুবই জাগ্রত দেবী এমনই বিশ্বাস স্থানীয়দের। আর সেই বিশ্বাসেই সমস্ত কিছু মিলে যায় এখানে। এমনভাবেই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে সমস্ত গল্পকথা।
নবাব মল্লিক