বাম আমলে সেই ফল গোটা রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেছে। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের জেরে তখন রাজনৈতিক মহলের নজরে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম আসন হারলেও দুই মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রামের মতো এলাকায় ভাল ফল করে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই সাংগঠনিক বৈঠকে এই সব জেলায় আগে থেকেই পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে লোকসভার প্রস্তুতি শুরু করে দিচ্ছে শাসক দল।
advertisement
আরও পড়ুন: রাতের অন্ধকারে পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে ঢুকে বাইকে আগুন দুষ্কৃতীদের
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক ও কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের দুই সাংসদ সদস্যই তৃণমূল কংগ্রেসের। দু'জনেই অধিকারী পরিবারের সদস্য। যে অধিকারী পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব দীর্ঘতর হয়েছে জোড়া ফুল শিবিরের। বিরোধী দলনেতার জেলার এই দুই আসন নিয়ে চর্চা আছে বিজেপির অন্দরেও৷
ইতিমধ্যেই এই দুই লোকসভা আসনের বুথ স্তরীয় সংগঠনে একাধিক বদল এসেছে। যদিও নন্দীগ্রামের বুথ স্তরীয় বদল নিয়ে নানা অনুযোগ উঠে এসেছে তৃণমূলের অন্দরে৷ কাঁথিতেও বুথ স্তরীয় ক্ষেত্রে একাধিক বদল এসেছে। প্রকাশ্যে না বললেও দলের অন্দরে এই নিয়ে চর্চা হয়েছে। যদিও গত ৮ অগাস্ট নেতাজি ইন্ডোরের বিশেষ অধিবেশন থেকে নানা বুথ স্তরীয় বিষয় উঠে আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের বাকিদের অর্থাৎ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরুপ বিশ্বাস, সুব্রত বক্সীকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। তাই জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচন নিয়ে আলোচনাতেও গুরুত্ব পেতে পারে বুথ স্তরীয় সংগঠনে জোর দেওয়ার ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: ৭০ বছরে যমজ সন্তানের বাবা হলেন দত্ত দম্পতি, ৫৪ বছরে মা হলেন রূপা
রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলের প্রেস্টিজ ফাইট। তাই রাজনৈতিক ভাবে এখন থেকেই জমি শক্ত করতে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর। সেখানে লোকসভা ভোটের ফলের হিসাবে ম্যাচ ১-১। মেদিনীপুর আসন বিজেপির দিলীপ ঘোষের হলেও ঘাটাল আসন তৃণমূলের হয়ে ধরে রেখেছেন সাংসদ দেব। জঙ্গলমহলের জেলা হিসাবে পরিচিত মেদিনীপুর লোকসভা আসনের জন্যেও এখন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়তে চায় জোড়া ফুল। যে কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অজিত মাইতি সকলকে নিয়ে বসে আলোচনার কথা বলেছিলেন। ঝাড়গ্রাম নিয়েও জনপ্রতিনিধিরা যে উদাসীন থাকছেন সেটাও বিশেষ অধিবেশন থেকে মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জঙ্গলমহলের এই আসনের দখল বিজেপি নিয়েছিল। যদিও বিধানসভায় বদলে যায় সেই ফলাফল। এই অবস্থায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই পূর্ব মেদিনীপুর সফর রাজনৈতিক ভাবেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সকলে। কারণ এখন থেকেই তিন জেলার সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে চায় শাসক দল।