তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের বাস যে সব এলাকায় বেশি সেখানে তো বটেই, সম্পূর্ণ আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম ও পাড়াগুলির তালিকা তৈরি করে ব্লকের নেতারা ইতিমধ্যেই যাচ্ছেন। কারও প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র, কারও ভাতার ব্যবস্থাও করে দিচ্ছেন নেতারা। সেই ফাঁকে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আদিবাসী মানুষদের কৌতূহলের জবাব দিচ্ছেন। আদিবাসী মন পেতে তৃণমূলের এই প্রচেষ্টাকে খোঁচা দিচ্ছে বিজেপি।
advertisement
আরও পড়ুন: ১০ ফুটের ব্যবধানে তৃণমূল-বিজেপির মঞ্চ, নন্দীগ্রামে কর্মসূচি ঘিরে কুণাল-শুভেন্দু তরজা
আদিবাসীদের মনের তল পেতে এ বার আদিবাসী পাড়ায় পাড়ায় পৌঁছবে শাসকদল।গত লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। দলের নির্বাচনী বিশ্লেষণে উঠে এসেছিল, শাসকদলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আদিবাসীদের একটা বড় অংশ। ২০২১ সালে জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে তৃণমূল ভালো ফল করলেও, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় ফল খারাপ হয়। উত্তরের জেলাতেও আদিবাসী ভোট তৃণমূলের পক্ষে যায়নি৷ সেই ভোট পুনরুদ্ধারে তৃণমূলের নজরে এখন আদিবাসী ভোট।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। গত লোকসভা নির্বাচনের আদিবাসী ভোটের বেশিরভাগটাই চলে গিয়েছে পদ্মে। বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের হাত ধরে বিধানসভা ভোটে তার একটা বড় অংশ উদ্ধার করা গেলেও তাকে ধরে রাখাটাই এখন চ্যালেঞ্জে শাসকদলের কাছে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের সলতে পাকানো শুরু করতেই চাই তৃণমূল নেত্রী।
সে কারণে নদিয়ার মতুয়াদের পর এ বার আধিবাসীদের নেতা বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে থাকবেন তিনি।এ বছর মে মাসে তিনি প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে ঝাড়গ্রামে গিয়েছিলেন। তার পর এই সফর। মূলত, আদিবাসী নেতা বিরসা মুন্ডার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই তিনি ঝাড়গ্রাম যাচ্ছেন। জানা গিয়েছে, সরকারি সভায় বেশ কিছু প্রকল্পেরও উদ্বোধন করতে পারেন তিনি।
দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার,মালদা, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দক্ষিণ দিনাজপুর—এই জেলাগুলিতে বহু সংখ্যক আদিবাসীর বসবাস। এই জেলাগুলিতে বিশেষ নজর দিচ্ছে বিজেপি। লোকসভা ভোটের বিধানসভাওয়াড়ি ফল অনুযায়ী, রাজ্যের তফসিলি উপজাতি অধ্যুষিত ১৬টি বিধানসভার মধ্যে। এর মধ্যে বিজেপির দখলে ছিল ১৩টি, তৃণমূলের দখলে ছিল ৩টি আসন।
কিন্তু ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের তফসিলি উপজাতি অধ্যুষিত ১৬টি বিধানসভার মধ্যে তৃণমূলের দখলে আসে ৯টি আসন, আর বিজেপি দখল পায় ৭টির। প্রদত্ত ভোটের ৪৫ শতাংশ ছিল তৃণমূলের ঝুলিতে, আর বিজেপির দখলে ছিল ৪৪ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট।