বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল থেকে কটুচুয়া, মাজগেড়িয়া গ্রামে বন দফতরও পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিং করে জনসাধারণকে সচেতন থাকার অনুরোধ করা হচ্ছে। একা কেউ জঙ্গল রাস্তা দিয়ে যাতে চলাফেরা না করে সে কথাও বার বার মাইকিং করে গ্রামে বলা হচ্ছে বনদফতরের পক্ষ থেকে। এদিন সারাদিন কটুচুয়ার জঙ্গলেই জিনাত ছিল বলে জানা গিয়েছে। তারপর বিকেল হতেই সেখান থেকে সরে গিয়ে চিড়াকুটির দিকে এগিয়ে এসেছে বাঘিনী। কটুচুয়ার বাসিন্দা নরেন মাণ্ডি বলেন, “বনদফতর থেকে মাইকিং করে বলা হচ্ছে জঙ্গলে ছাগল-গোরু নিয়ে চরাতে যাওয়া যাবে না। বাঘ ঢুকে পড়েছে কটুচুয়ার জঙ্গলে। খুবই ভয় লাগছে”।
advertisement
আরও পড়ুন: ক্রিস্টাল ক্লিয়ার জলরাশি! হাতে-হাত রেখে পাশাপাশি বসে থাকা, আসবেন নাকি ঘুরতে
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, “জঙ্গলে যেহেতু বাঘ রয়েছে তাই সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করব আপনারা এই মুহূর্তে কেউ জঙ্গলে যাবেন না। অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে সকল গ্রামবাসীকে। বনদফতরের পক্ষ থেকে এলাকায় ২৪ ঘন্টা গাড়ি রাখা হচ্ছে। যদি গ্রাম থেকে কোথাও মানুষজনকে যেতে হয় তাহলে অবশ্যই বিট অফিসার, রেঞ্জ অফিসারদের জানিয়ে যেতে হবে। অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে আমরা সমন্বয় রেখে কাজ করছি”। ঝাড়গ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, “ওই এলাকায় বাঘ ধরার জন্য বিশেষজ্ঞ টিমকে পাঠানো হয়েছে। কলকাতার অরণ্য ভবন থেকেও নজরদারি রাখা হচ্ছে। সুন্দরবন থেকে একটি স্পেশাল টিমকে বেলপাহাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। বাঘিনী খুব তাড়াতাড়ি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে। যার ফলে সহজেই ধরা পড়ছে না। পুরো ব্যাপারটাকেই বনদফতর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে”।
পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন মানচিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হল অরণ্য সুন্দরী ঝাড়গ্রাম প্রতিবছর এই শীতের সময় প্রচুর পর্যটকের ঢল নামে ঝাড়গ্রামে। সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভ থেকে জিনাত ঝাড়গ্রাম জেলার বর্ডার সংলগ্ন ঝাড়খন্ড রাজ্যের চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গলে পৌঁছাতে জিনাতের ভয়ে বহু পর্যটক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল অরণ্য সুন্দরীর দিক থেকে। এবার ঝাড়গ্রামে ঢুকে পড়েছে বাঘিনী। ফলে পর্যটন শিল্পে চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছে ঝাড়গ্রামের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ঝাড়গ্রামের একটি হোমসের কর্ণধার মধুসূদন কর্মকার বলেন, “এই সময় প্রতিবছর বহু পর্যটক বেড়াতে আসে। জানুয়ারি মাস পর্যন্ত অগ্রিম বুকিং রয়েছে। এই এলাকায় বাঘ ঢুকে পড়াই পর্যটকরা বারে বারে ফোন করে জিজ্ঞাসা করছে যাওয়াটা ঠিক হবে কি হবে না। পর্যটক না আসলে আমাদের বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে”।
বুদ্ধদেব বেরা