শুক্রবার সকালে একটি সূত্র মারফত জানা যায় জিনাত ঝাড়গ্রাম জেলার বর্ডার থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে চাকুলিয়া রেঞ্জের চাঁদড়া ভুকলা মৌজার ছোট ছোট ডুংরি ও শাল জঙ্গলের মধ্যে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম জেলার বর্ডার থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে চাকুলিয়া রেঞ্জের মালখাম এলাকায় ছিল। সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভের কর্মীরা বহু চেষ্টা করেও কোন মতে পাকড়াও করতে পারেনি বাঘিনী জিনাতকে। অবশেষে বিকেলের পর থেকে মালখাম থেকে ঝাড়গ্রাম জেলার বর্ডারের দিকে এগোতে শুরু করে জিনাত।
advertisement
বুধবার বাঘিনী ঝাড়গ্রাম বর্ডার থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে ভালুকবিঁধার জঙ্গলে ছিল। বাঘিনীকে ধরার জন্য চাকুলিয়া রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকার গভীর জঙ্গলে ১২টি খাঁচা বসানো হয়েছিল। তার মধ্যে টোপ হিসেবে দেওয়া হয়েছিল ছাগল কোথাও আবার মহিষ বেঁধে দেওয়া হয়েছিল জঙ্গলের পাশে। বাঘিনীকে দেখলেই ঘুম পারানি গুলি করে কাবু করার জন্যও রীতিমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভের বন কর্মীরা। কিন্তু কোন মতেই বাঘিনীকে বাগে আনতে পারছে না বনকর্মীরা। বুধবার রাত্রে ভালুকবিঁধার জঙ্গল থেকে বাগিনী তিন কিলোমিটার দূরে মালখামের জঙ্গলে চলে যায়। ফলে ঝাড়গ্রাম জেলার বর্ডার থেকে বাঘিনীর দূরত্ব কমে দাঁড়ায় মাত্র ৮ কিলোমিটার। এবার সেই দূরত্ব আরও কমে দাঁড়ালও ৪ কিলোমিটার।
জানা গিয়েছে, চলতি বছরে মহারাষ্ট্র থেকে জিনাত সহ তিনটি বাঘ নিয়ে এসে ২৯ শে নভেম্বর জিনাত কে ছাড়া হয়েছিল সিমলিপালের জঙ্গলে। তারপর থেকেই সে রোমিং (রোমিং করা মানে বাঘিনী তার নিজের এলাকা চিহ্নিত করা শুরু করে ) করা শুরু করে।জিনাত রোমিং করতে করতে চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গলে এসে পৌঁছায়। জানা গিয়েছে, শিমলিপাল টাইগার রিজার্ভ থেকে রায়রনপুর, বিশুই হয়ে ঝাড়খণ্ডের মুসাবনি রেঞ্জ হয়ে চাকুলিয়া রেঞ্জে পৌঁছায়।
সাধারণত, মহারাষ্ট্র এবং সিমলিপালের বাঘেরা মানুষের উপর আক্রমণ করে না। তাই এখনও পর্যন্ত এরকম কোন খবর সামনে আসেনি। এই সমস্ত জঙ্গলে প্রচুর পরিমাণে বোন শুয়োর ও বন খরগোশ থাকার কারণে তাদেরকেই খাদ্য হিসেবে খেয়ে থাকছে এই বাঘিনী। জানা গিয়েছে, সিমলিপালের রিজার্ভ ফরেস্টে বর্তমানে ৩৫টি বাঘ রয়েছে। তার মধ্যে ১৩ টি পুরুষ, ১৪ টি স্ত্রী এবং ৮টি বাচ্চা। শিমলিপাল টাইগার রিজার্ভ থেকে আসা বনকর্মীরা ঘুমপাড়ানি গুলি করে বাঘিনীকে ধরে পুনরায় শিমলিপালের টাইগার রিজার্ভে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর কদমে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
Buddhadev Bera