অপর্না পাত্র বিধবা প্রান্তিক মহিলা স্বমন্বিত মাছ চাষ মানে মাছ চাষ ও ছাগল পালন করে সংসারের হাল ফিরিয়েছেন। ছেলেদের সুশিক্ষিত করে বড় করেছেন। একজন মহিলা হয়েও অপর্না দেবী নিজে হাতে মাছের খাবার দেন পুকুর পরিচর্যা করেন ও মাছ ধরেন। অপর্ণা দেবী মাছ চাষ শুরু করেছিল হঠাৎ স্বামীর মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে। প্রথমে হলদি নদীর থেকে মাছ ধরে এনে সেই মাছ নিজেদের পুকুরের ছেড়ে বড় করে বিক্রি করা শুরু করেন। কুড়ি বছর আগে তাঁর এই যাত্রা শুরু হয়েছিল। প্রথমবার মাছ বিক্রি করে তার আয়- হয়েছিল ৩০ হাজার টাকা। তারপর তাকে আর ঘুরে দেখতে হয়নি। হলদি নদী থেকে মাছ ধরে এনে পুকুরে চাষ করে বিক্রি করেই ও রুটি রোজকার চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে অপর্ণা পাত্র জানান, ‘বিয়ে করে স্বামীর হাত ধরে হলদি নদী তীরে এসে বসবাস শুরু করি।
advertisement
শ্বশুরবাড়ি এসে দেখেন ধান চাষের জমিতে শ্বশুরমশাই মাছ চাষ করে। হঠাৎই একদিন গাছ থেকে পড়ে মারা যায় স্বামী। তারপর থেকে সংসারের বেহাল দশা। বাড়ির বউ, তাই কোনও দিনই মাছ ধরতে যাইনি। এক প্রকার সংসারের হাল ফেরাতেই অন্যদের দেখে হলদি নদীতে মাছ ধরার কৌশল রপ্ত করি। অন্যের জালে মাছ ধরতে হত, তাই বড় মাছগুলো তারা নিয়ে যেত। ছোট মাছগুলো নিয়ে এসে বাড়ির পুকুর ও ধান জমিতে বড় করা শুরু করি। আর তাতেই প্রথম বছর এই লাভ ভাল হয়। হলদি নদী থেকে মাছ ধরা ও মাছ চাষ করা। দুটো মেয়ে ও দুটো ছেলে কে পড়াশোনা করিয়েছি মাছ ধরেই।’ অপর্ণা দেবী বর্তমানে দুটো মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। এমনকি বড় ছেলেকেও সংসারের করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: টিভি ভুলে যান! এ বার চোখের সামনে দেখুন রাম-রাবণের যুদ্ধ! গায়ে কাঁটা দেবে
স্বামী মারা যাওয়ার পর চার ছেলেমেয়েকে মাছ ধরেই মানুষ করেছেন তিনি। বর্তমানে একজন সফল মৎস্য আরোহণ ও মৎস্য চাষি হিসাবে ব্লক জুড়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। হলদি নদীতে মাছ ধরে নিজের জীবন ও সংসারের হাল ফিরিয়েছেন তিনি। তাঁকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছে অন্যরাও। কুড়ি বছর ধরে তাঁর এই নদীতে মাছ ধরার রুটিনের মত চলছে। নদীতে মাছ ধরা ও মাছ চাষ করার মধ্যেই তিনি খুঁজে পেয়েছেন জীবন জীবিকা ও বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা।