সম্প্রতি জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাল্যবিবাহ’ প্রতিরোধের বার্তাবহ শর্ট ফিল্ম প্রতিযোগিতাতেও খড়্গপুর গ্রামীণের হিজলি সংলগ্ন কুচলাচাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সেই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা (টিচার ইন-চার্জ) তনুশ্রী দাস আগামী ৫ সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবসের দিন ‘জাতীয় শিক্ষক পুরস্কার’-এ ভূষিত হতে চলেছেন। এর আগে ২০২০ সালে রাজ্য সরকারের ‘শিক্ষারত্ন’ পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।
advertisement
কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে চলতি বছর শিক্ষক দিবসে সারা দেশের ৪৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার হাতে তুলে দেওয়া হবে ‘জাতীয় শিক্ষক পুরস্কার’। ২৫ আগস্ট প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই ৪৫ জনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মাত্র দু’জন রয়েছেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে দু’জনই শিক্ষিকা।
এই দু’জনের মধ্যে একজন খড়্গপুর গ্রামীণের হিজলি সংলগ্ন প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত কুচলাচাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা তনুশ্রী দাস। অপরজন কলকাতার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষিকা মধুরিমা আচার্য। সেই হিসেবে বাংলা মিডিয়ামের একমাত্র শিক্ষক হিসেবে এই পুরস্কার পাচ্ছেন বছর ৪৫-এর তনুশ্রী। স্বাভাবিকভাবেই এই খবরে উচ্ছ্বসিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন থেকে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। সোমবার দুপুর নাগাদ এই খবর পৌঁছনোর পর থেকেই শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসছেন শিক্ষিকা তনুশ্রী দাস।
আরও পড়ুনঃ ভোটার তালিকায় ‘ভূত’! ছাব্বিশের ভোটের আগেই মিলল খোঁজ, এবার কোথায় জানেন?
২০২০ সালে রাজ্য সরকারের ‘শিক্ষারত্ন’ পুরস্কার পাওয়ার পর অর্থমূল্যের ২৫ হাজার টাকাই নিজের স্কুলের উন্নয়নকল্পে তুলে দিয়েছিলেন তনুশ্রী। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে তাঁর হাতে রৌপ্য পদক এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এই অর্থ নিয়ে নতুন কিছু ভাবনা?
তনুশ্রী বলেন, ‘মেডেলখানি আমার হলেও, এই অর্থে আমার একার কোনও অধিকার নেই। এই অর্থ যতখানি আমার, ঠিক ততটাই আমার সহকর্মী সহ পড়ুয়া ও অভিভাবকদের। তাই স্কুলের জন্যই এই ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করব’। ২০২২ সালে কুচলাচাটি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সরকারের স্বচ্ছ বিদ্যালয় পুরস্কার সম্মান পেয়েছে। ২০২৩ সালে রাজ্য সরকারের নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কারও পায় এই স্কুল। ১৯৯৯ সাল থেকে শিক্ষকতা করলেও ২০১৬ সালে কুচলাচাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব গ্রহণ করেন তনুশ্রী দাস। দীর্ঘ এই শিক্ষকতা জীবনে শুধু স্কুল নয়, তিনি বদলে দিয়েছেন স্কুলের আশেপাশের পরিবেশও।