চন্দ্রমোহন ছিলেন বিখ্যাত বস্ত্র ব্যবসায়ী, বিদেশ থেকে বিলিতি কাপড় নিয়ে চন্দ্রমোহন পালের নৌকো নিয়মিত ভিড়ত কলকাতার গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে। সেখান থেকে কাপড় যেত মহানগরে তাঁদের আড়তে। তাই নিজের সুবিধার জন্য সেইসময় গঙ্গার পাড়ে নিজের খরচে একটি ঘাট তৈরি করেন যা এখনও \’চাঁদপাল ঘাট\’ নামে পরিচিত।
আনুমানিক ২৫০ বছর আগে বর্ধমান রাজাদের থেকে বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস অঞ্চলের ছ\’টি মৌজা কেনেন চন্দ্রমোহন পাল। ইন্দাসেও জমিদারি শুরু করার সঙ্গে সোমসারে দামোদর নদের পাড়ে তৈরি করেন সুবিশাল অট্টালিকা।
advertisement
ব্যবসা সূত্রে পাল বংশের সদস্যরা কলকাতায় থাকলেও পুজোর দিনে তাঁরা গরিব প্রজাদের জন্য নতুন জামাকাপড় নিয়ে সোমসার ঘাটে নামতেন। ওই দিনটার জন্য সারাবছর অপেক্ষায় থাকত রাম থেকে রহিম সকলে। পুজোর চারদিন চলত যাত্রাপালা, পুতুলনাচ, রামলীলা। নহবতখানায় বসত নহবতের আসর।
সোমসার জমিদার বাড়ির নাটমন্দির এখনও মেতে ওঠে পুজোর আনন্দে।পুজোর সময় চাঁদ পালের উত্তরপুরুষরা ছুটে আসেন দামোদর আর শালি নদীর মোহনায় সোমসার গ্রামের জমিদার বাড়িতে।
এখন সময়ের ব্যবধানে সেই প্রাচুর্যে টান ধরেছে। জমিদারি চলে গেছে বহুদিন। পারিবারিক কাপড়ের ব্যবসাও আর নেই।
২৫০ বছরের ঐতিহ্য এবং সেই পাল বংশের দুর্গাপুজোর ইতিহাস নিয়ে আজও বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার সোমসারে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভগ্নপ্রায় জরাজীর্ন এক প্রাসাদ। আবারও পালেদের মা স্বমহিমায় আসতে চলেছেন এই বছরও।