পাঁশকুড়ার হাউরের পুরুল গ্রামের বাসিন্দা অর্পিতা পাত্র পেশায় অধ্যাপিকা। প্রকৃতিকে জানার নেশা তাঁর অনেক দিনের। তথ্যচিত্র দেখে পর্বত জয়ের নেশা ভর করে। তারপরেই সিদ্ধান্ত নেন, পর্বতারোহণের। ইচ্ছে থাকলেই তো আর পর্বতারোহণ করা সম্ভব না। তার জন্য রীতিমত নিতে হয় প্রশিক্ষণ। নিতে হয় প্রস্তুতি। এই মত নিজেকে গড়ে তোলেন অর্পিতা। তারপর শুরু হয় পর্বত আরোহণ। নিজের অভিযানের নাম দেন ‘এক্সপিডিশন অপরাজিতা’। আগেই জয় করেছেন কাঞ্চনজঙ্ঘা। এরপর অর্পিতা জয় করেছিলেন আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো এবং ইউরোপের সর্বোচ্চ আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এলব্রুশ। ওশিয়ানিয়ার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট কোজ়িয়াসকো ও সর্বোচ্চ আগ্নেয় শৃঙ্গ মাউন্ট গিলুউই জয় করেন তিনি।
advertisement
সুদূর মেক্সিকো থেকে অর্পিতা জানিয়েছেন,
“এক সময়ে কাজ নিয়ে হাঁফিয়ে গিয়েছিলাম। ২০২৪ সালে মনে হল, আরও কিছু করতে পারি। সেই অন্তরের ডাককে অগ্রাহ্য করতে পারিনি। গোচালা ট্রেক এবং কিলিমাঞ্জারো অভিযান দিয়েই আমার পাহাড়ে হাতেখড়ি। সামনের বছর দক্ষিণ আমেরিকার ওহোস ডেল সালাডো আগ্নেয় শৃঙ্গ জয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এটি সাত হাজার মিটার উঁচু। চার মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় হয়ে গিয়েছে। বাকি তিন মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়ের স্বপ্ন রয়েছে। এই আগ্নেয়গিরির অভিযান আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন ছিল কারণ, জামাবা হিমবাহ রুট দিয়ে উপরে ওঠার সময় একদিনেই ১৪৫০ মিটার চড়তে হয়েছে। আগ্নেয়গিরির পুরো পথটাই প্রায় ৪৫ ডিগ্রি খাড়া।”
অল্প সময়েই পেশাগত জীবনে একের পর এক সাফল্য অর্জন করলেও তাঁর মনে হয়েছিল, জীবনে আরও কিছু করার আছে। সেই তাগিদ থেকেই শুরু হয় তাঁর পাহাড়ে অভিযান। বর্তমানে বেঙ্গালুরু নিবাসী অর্পিতা পাত্র আজ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সে কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপিকা। তবে ক্লাস, গবেষণা আর পড়ুয়াদের নিয়ে ব্যস্ততার মাঝেও সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়েন পাহাড়ে চড়তে। অর্পিতা পা রাখলেন ৫৬৩৬ মিটার উঁচু পিকো দে ওরিজ়াবায় করলেন অর্পিতা। দ্বিতীয় ভারতীয় মহিলা ও প্রথম বাঙালি মহিলা হিসেবে ওই শৃঙ্গ জয় করলেন অর্পিতা। মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে জামাপা হিমবাহ পেরিয়ে সফল ভাবে পর্বতারোহণ শেষ করেছেন ৪১ বছর বয়সী অর্পিতা।





