সোমবার অন্য সব দিনের থেকে একটু অন্যরকম অনুভূতি নিয়েই ওরা ফিরল উলুবেরিয়া শরৎচন্দ্র মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে। যে শিশুরা থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাচ্ছিল তাদের নিয়ে হাওড়ার গ্রাম শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন অভিভাবকরা। হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া ডে কেয়ার ইউনিটে এসে দেখেন শিশু দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন। তাই আক্ষেপটা নিমেষেই বিলীন হয়ে গিয়ে চোখে মুখে আনন্দ ফুটে ওঠে অভিভাবকদের।
advertisement
আরও পড়ুন - ‘‘লাশ ফেলে দেব’’- নিয়ম ভেঙে স্কুলে ভর্তি না নেওয়ায় প্রধানশিক্ষককে খুনের হুমকি
রক্তদান আন্দোলনের কর্মীদের সংগঠন রক্তকরবীর উদ্যোগে এদিন থ্যালাসেমিয়া শিশুদের নিয়ে শিশু দিবস উদযাপন হয় উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র মেডিকেল কলেজের থ্যালাসেমিয়া ডে কেয়ার ইউনিটে। হাসপাতালের ভিতরে বসে আঁকো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে সন্তান। তা দেখে এক মা বলে ওঠেন, হাসপাতালে রক্ত দিতে হবে বলে ছেলেটা স্কুলে যেতে পারেনি। তাই আজকের দিনে কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু, হাসপাতালে এসে দেখি যারা আমাদের সন্তানদের জন্য রক্তদান করেন তারাই বসে আঁকো প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন।
শ্যামপুরের রামচন্দ্রপুরের শেখ শাহনাওয়াজ, শ্যামপুরের অযোধ্যার রাজু মাঝি, ডোমজুড়ের কোলড়ার রিম্পা ঘোষ, বালটিকুড়ির রীতি মাঝি, বাগনানের শেখ কামরুজ্জামান, শ্যামপুরের মৌলার অয়ন গুড়েদের কাছে সোমবার দিনটা ছিল একটু অন্য রকমের। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এইসব শিশুরা সোমবার উলুবেড়িয়াতে শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে কিছুটা চমকে গিয়েছিল। কারণ এদিন শিশু দিবস উপলক্ষ্যে তাদের জন্য বসে আঁকো প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল রক্তকরবী। আর অভিভাবকদের সঙ্গে হাসপাতালে রক্ত নিতে এসে এহেন উদ্যোগে খুশী এইসব শিশুরা। মনের আনন্দে কেউ আঁকলো প্রাকৃতিক দৃশ্য, কেউ আবার আঁকলো পচ্ছন্দের ফুল। শেষে উপহার হাতে অভিভাবকদের সঙ্গে বাড়ি ফেরা।
এককথায় সোমবার শিশু দিবসে উলুবড়িয়া মেডিকেল কলেজে আসা রুগী ও তাদের আত্মীয়রা একটু অন্য ছবি দেখল। এদিনের এই অনুষ্ঠানে শিশুদের উৎসাহ দিতে হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিকেল কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট মেডিকেল সুউপারিনটেনড্যান্ট কাম হাসপাতাল সুপার হাসিবুল মল্লিক। প্রতিযোগিতার শেষে শিশুদের হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়। শিশু দিবসে হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে রক্তকরবীর এই অভিনব উদ্যোগকে অভিনন্দন জানিয়েছেন হাসিবুল মল্লিক। ২৩ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল। তাদের প্রত্যেককে হাতে লেখার বই, আঁকার জন্য পেন্সিল, রাবার দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীকে পুরষ্কৃত করা হয় রক্তকরবীর পক্ষ থেকে।
Debasish Chakraborty