পাশাপাশি হাজার হাজার ঝুড়ি, কুলো ও মাদুর-সহ বাংলার নানান হস্তশিল্প দিয়ে গড়ে উঠছে একটি আকর্ষণীয় মণ্ডপ। কোথায় গেলে দেখা মিলবে এমন চোখ জুড়ানো মণ্ডপসজ্জা?
advertisement
পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের সেক্টর টু-সি দুর্গাপুজো কমিটির পুজোর মণ্ডপে এমনই নিদর্শন ফুটে উঠছে এবার। তাঁদের মণ্ডপ ও প্রতিমা পরিবেশ মনমুগ্ধকর হয়ে ওঠে প্রতিবছরই। দর্শনার্থীদের সমাগম হয় চোখে পড়ার মত। তাঁদের পুজো এবার ৩৮’তম বর্ষে পদার্পণ করছে। এবারের তাঁদের পুজোর থিম ‘বাংলায় এল মা’। প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা ব্যয় করে থিম গড়ে উঠছে। আকর্ষণীয় মণ্ডপ গড়ছে নবদ্বীপের গুণী শিল্পীরা। সঙ্গে রয়েছেন মেদিনীপুরের একাধিক হস্ত শিল্পী। মণ্ডপ চত্বরেই তৈরি হচ্ছে হস্ত শিল্পের নানান সামগ্রী।
আরও পড়ুনঃ ৪৫০ বছরের এক করুণ ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে ব্যবত্তাবাটির বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজোয়! শুনলে চোখে জল আসবে
মণ্ডপ তৈরির এক অন্যতম শিল্পী ধর্ম কুণ্ডু জানান, এই রাজ্যে প্রথম এই থিম করা হচ্ছে। বাংলার সমস্ত হস্ত ও কুটির শিল্পের সামগ্রী দিয়ে মণ্ডপ সেজে উঠছে। টেরাকোটার, পোড়া মাটির পুতুল, ঝুড়ি, কুলো ও মাদুর ছাড়াও মণ্ডপ তৈরি করতে ব্যবহার হচ্ছে, চাটাই, বাঁশ, চালুনি, কাপড়, ফাইবারের মডেল-সহ নানান হস্তশিল্প।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
দেড় হাজার ঝুড়ি, এক হাজার পোড়া মাটির পুতুল, দেড় হাজার মাদুর ও শতাধিক কুলো দিয়ে সজ্জিত হচ্ছে মণ্ডপ। মণ্ডপে থাকছে আরও আকর্ষণীয় ঝুড়ি দিয়ে তৈরি দুর্গা, কালি ও গনেশ-সহ একাধিক দেবদেবীর মডেল। প্রায় ১৫ জন শিল্পী রাতদিন এক করে নিখুঁত হাতে মণ্ডপ গড়ে তুলছেন।
পুজো উদ্যোক্তা দেবাশিস গোস্বামী জানান, বাঁকুড়ার টেরাকোটা ঘোড়া একটি বিখ্যাত লোকশিল্পের নিদর্শন। যা মূলত বাঁকুড়া জেলার পাঁচমুড়া গ্রামে তৈরি হয়। সেই নিদর্শন ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে এবারের মণ্ডপে। মণ্ডপ চত্বরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য খ্যাতি আছে এই পুজোর। মণ্ডপ চত্বরে একটি মেলাও বসে প্রতিবছরই। তা সত্ত্বেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বহু বার সেরা শিরোপা পেয়েছে।
পুজোর সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক অরুপ দাস ও অরুণ দত্ত জানান, মণ্ডপ ও প্রতিমাতে পুজো কমিটি বহুবার পুরস্কার পেয়েছে। এবার তাঁদের থিমের মূল উদ্দেশ্য, প্লাস্টিকের দাপটে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে পরিচিতি করানো। পাশাপাশি হস্তশিল্পীদের রোজগারের দিশা দেখানো।