পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সদর শহর তাম্রলিপ্ত তথা তমলুকের এই দুর্গাপুজো ঘিরে রাজবাড়িজুড়ে সাজো সাজো রব। বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণে বহু প্রাচীন প্রথা মেনে ঐতিহাসিক এই রাজবাড়ির পুজোর প্রস্তুতিতে মেতে উঠেছে বাড়ির সদস্য সহ এলাকার মানুষ। এখনও অতীতের রাজ ঐতিহ্য মেনে ঢাকে কাঠি পড়ে।
আরও পড়ুনঃ পুজোর আবহে ভিটেমাটি হারানোর ভয়! গভীর রাতে তলিয়ে গেল একের পর এক বাড়ি, তারানগরের করুণ পরিস্থিতি দেখুন
advertisement
একসময় তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি তথা তমলুক রাজবাড়ির এই দুর্গাপুজো ছিল একান্তই রাজবাড়ীর অন্দরমহলের পুজো। তমলুক রাজবাড়ির রাণীমা সহ মহিলারা আয়োজন করতেন। ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, অন্দরমহলের এই পুজোয় শুধুমাত্র রাজার আমন্ত্রণ থাকত। এছাড়া বাইরের কেউই প্রবেশ করতে পারতেন না। এখন তমলুক রাজবাড়িতে দুর্গাপুজো হলেও সেই পুজো হয়ে উঠেছে সর্বজনীন। রাজবাড়ির পৃষ্ঠপোষকতায় আদি তাম্রলিপ্ত সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির উদ্যোগে প্রতিবছর পুজোর আয়োজন করা হয়।
বর্তমানে খসে পড়েছে রাজবাড়ির পলেস্তারা। হারিয়ে গিয়েছে সরগরম রাজসভা, নাচমহল। ভগ্নস্তুপের মাঝেই স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে দাঁড়িয়ে কেবল জরাজীর্ণ লাল চুন-সুড়কির দেওয়াল। তাও আবার সংস্কারের অভাবে সংকটের মুখে! বহু প্রাচীন তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি কৌলিন্য হারালেও দুর্গাপুজোয় সেই সাবেকিয়ানা বজায় রাখতে মরিয়া প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম।
বর্তমান সর্বজনীন দুর্গাপুজোর মুখ্য উদ্যোক্তা তমলুক পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ির অন্যতম সদস্য দীপেন্দ্র নারায়ণ রায়। তিনি বলেন, “তমলুক রাজবাড়ির দুর্গাপুজো একসময় বাড়ির মহিলারাই আয়োজন করতেন। মাঝে তা বন্ধ হয়ে যায়। বিগত ১৭ বছর ধরে এলাকাবাসীদের নিয়ে সমস্ত রকম রীতি মেনেই এই দুর্গাপুজোর অনুষ্ঠান এখন সর্বজনীন রূপ নিয়েছে।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
প্রসঙ্গত, তমলুক শহরে দুর্গাপুজোর প্রাচীন ইতিহাস রাজবাড়ির সঙ্গেই জড়িত। সেই রাজবাড়ির পৃষ্ঠপোষকতায় নতুনভাবে আদি তাম্রলিপ্ত সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির উদ্যোগে প্রতিবছর দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়। বিগত কয়েক বছর এই দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। একসময় রাজবাড়ির অন্দরমহলের এই দুর্গাপুজো বর্তমানে রাজ পরিবারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের পুজো হয়ে উঠেছে।