একদিকে স্বজন হারানোর শোক, অন্যদিকে আইনি জটিলতা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তম্রলিপ্ত গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে বারে বারে ঘুরে গিয়েও মিলছে না মৃতদেহের ময়না-তদন্তের (পোস্টমর্টেম) রিপোর্ট। এর ফলে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন মৃতের পরিবার পরিজনেরা। ডেথ সার্টিফিকেট, জীবন বীমা, দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণের দাবি (রোড এক্সিডেন্ট ক্লেম), এমনকি ওয়ারিশন সার্টিফিকেট-এর মত গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলিও দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে। অভিযোগের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন তাম্রলিপ্ত মেডিকেল কলেজের সংশ্লিষ্ট ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসক।
advertisement
নতুন শ্রম আইনে মহিলাদের কী কী লাভ হল অনেকেই জানেন না! নারীদের নতুন সুবিধাগুলো দেখে নিন
আধুনিক, সুরক্ষিত এলএইচবি কোচ পাচ্ছে উত্তর পূর্ব ভারতের ১০ জোড়া ট্রেন! কলকাতা থেকে কোনগুলো জানুন
মৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনদের দাবি, পোস্টমর্টেম সম্পন্ন হলেও রিপোর্ট দিতে দিনের পর দিন সময় নেওয়া হচ্ছে। এমনকি সময় গড়িয়ে যাচ্ছে দিন পেরিয়ে মাসের পর মাস। বারবার ফিরে যাচ্ছেন মৃতের পরিজনরা, কাঠগড়ায় তম্রলিপ্ত হাসপাতালের এক চিকিৎসক। জানা গিয়েছে, রিপোর্টটি হাতে পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই একাধিকবার মেডিকেল কলেজে এসেছেন মৃতের অসহায় পরিজনরা। কিন্তু প্রতিবারই খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে তাঁদের। ক্ষুব্ধ পরিজনদের একজন বলেন, “যতক্ষণ না রিপোর্ট পাচ্ছি, আমাদের কিছুই করার নেই। সব কাজ আটকে রয়েছে। ডাক্তারবাবুর কাছে গেলেই শুধু ঘোরাচ্ছেন।”
বারবার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ মৃতের আত্মীয়-স্বজনেরা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক বেরোতেই তাঁর পিছু ধাওয়া। চাপান-উতর চরমে উঠলে ওই চিকিৎসক জানান, রিপোর্ট দিতে দেরি হওয়ার কারণ হল – প্রিন্টার খারাপ! চিকিৎসকের আজব যুক্তি শুনে হতবাক হয়ে যান সকলে! পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তমলুক থানার পুলিশ। তাঁরা দু’পক্ষকে শান্ত করে বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তির আশ্বাস দেন। একটি সরকারি হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট কেবলমাত্র প্রিন্টার খারাপ থাকার কারণে আটকে থাকতে পারে! এই ঘটনায় তাম্রলিপ্ত গভার্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের গাফিলতির রয়েছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।
প্রশ্ন উঠেছে, কেন রিপোর্ট প্রস্তুতির বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়নি? অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান না হলে আরও বড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হয়রানির শিকার পরিবার পরিজনেরা। যদিও এই বিষয়ে তাম্রলিপ্ত গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের কর্তৃপক্ষরা মুখ খুলতে নারাজ। দিনের পর দিন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়ায় এদিকে সমস্যায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। আটকে রয়েছে জীবনবিমা-সহ নানান গ্রান্ট।