নন্দীগ্রামে পঞ্চায়েত ভোটে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন পর্বকে সামনে রেখে মহামিছিল কর্মসূচি শেষ করেই বিরোধী দলনেতা রওনা দেন ঠাকুরনগরের উদ্দেশ্যে। তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবজোয়ার জনসংযোগ কর্মসূচিতে ঠাকুরনগর যাওয়ার আগেই চরম উত্তপ্ত হয় মতুয়া মহাসংঘের ঠাকুরবাড়ি চত্বর। যুযুধান তৃণমূল ও বিজেপি শিবিরের শ্লোগান পাল্টা স্লোগানে রীতিমতো সরগরম হয়ে ওঠে ঠাকুরবাড়ি।
advertisement
আরও পড়ুনঃ শরীর ঠান্ডা থাকে, ভালও রাখে, গরমে ‘এই’ পানীয় ঘটায় মিরাকেল, কীভাবে বানাবেন? শিখে নিন
রবিবারের সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার ঠাকুরনগরে যান শুভেন্দু অধিকারী। ঠাকুরবাড়িতে প্রণাম নিবেদন করে সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, অশোক কীর্তনীয়া, বঙ্কিম ঘোষ, সুব্রত ঠাকুর-সহ একাধিক বিধায়ক ও ঠাকুর বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হন শুভেন্দু অধিকারী।
আরও পড়ুনঃ গোছা গোছা চুল পড়ছে? রোজের পাতে রাখুন ‘এই’ ৬ খাবার, ৪৮ ঘণ্টায় ঘটবে মিরাকেল
সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল? প্রত্যেকেই সবিস্তারে বিরোধী দলনেতার সামনে তুলে ধরেন। রবিবারের ঘটনার পরপরই শাসক দলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ‘তৃণমূলের গুন্ডারা ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে পুলিশের সামনেই মতুয়া মহাসংঘের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে’। শুভেন্দুর নিশানা থেকে বাদ যাননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অভিষেককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ঠাকুরবাড়ি দখল করতেই তিনি (অভিষেক) ওখানে গিয়েছিলেন’।
শান্তনু ঠাকুরের বাড়িতে দীর্ঘ বৈঠকের পর শুভেন্দু অধিকারী এরপর সেদিনের ঘটনায় আহতদের দেখতে তাঁদের কাছে পৌঁছন। ‘তৃণমূল এবং পুলিশ তাঁদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। সারা শরীরে এখনও যন্ত্রণা রয়েছে’। কাঁদতে কাঁদতে এক মহিলা নালিশ করেন শুভেন্দুকে। ‘চিন্তা করবেন না। আমরা সবাই আপনাদের সঙ্গে আছি’। এই ঘটনার জন্য দায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে তোপ দেগে আহতদের পাল্টা অভয় দেন শুভেন্দু।
ঠাকুরনগর থেকে বেরিয়ে সোজা এরপর শুভেন্দু অধিকারীর কনভয় পৌঁছয় বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়ার বনগাঁর বাড়িতে। তাঁরও শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন শুভেন্দু। পাশাপাশি তাঁকেও লড়াই আরও তীব্র করার কথা বলেন বিরোধী দলনেতা। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘তৃণমূলীরা জনপ্রতিনিধি ছাড়াও মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত মহিলাদেরও মারধর করা থেকে রেয়াত করেনি। আঞ্চলিক দল তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের নবজোয়ার কর্মসূচির আড়ালে যে বিশৃঙ্খলা ঠাকুরবাড়িতে সৃষ্টি করা হয়েছিল, যেভাবে ঠাকুরবাড়ির পবিত্র মাটিকে অপমান করা হয়েছে তার নিন্দার কোনও ভাষা নেই’।
শুভেন্দু আরও বলেন,’ মুখ্যমন্ত্রী শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ও শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরকে অপমান করেছিলেন। এ বার ওনার ভাইপো কয়েক হাজার পুলিশ নিয়ে নবজোয়ারের নামে ঠাকুরবাড়িতে এসে মতুয়াদের ভাবাবেগকে আঘাত করেছেন। উল্টে তাঁদের উপর যে ভাবে পুলিশি অত্যাচার হয়েছে তার ফল আগামীদিনে ওদের ভুগতে হবে’। নাগরিকত্ব ইস্যুর জ্বালা থেকেই মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতি এই অত্যাচারের অন্যতম কারণ বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন শুভেন্দু।’
ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী