সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের ভেতরের নদী এবং খাঁড়িতে মাছ, কাঁকড়া ধরার জায়গা আগের চাইতে অনেকটাই ছোট হয়ে গিয়েছিল। আর এবার বন দফতরের নতুন নির্দেশিকা আরও সমস্যায় ফেলেছে মৎস্যজীবীদের। নতুন নির্দেশিকা বাতিলের পাশাপাশি বিনা কারণে সুন্দরবনের প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের ওপর বন দফতরের আক্রমণ ও বিভিন্ন সময়ে নৌকা, জাল বাজেয়াপ্ত করার মনোভাব বন্ধ না করলে আগামী দিনে সুন্দরবনের সব রেঞ্জ অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভকারী মৎস্যজীবীরা।
advertisement
আরও পড়ুন: মাছের চারা তৈরিতে ওস্তাদ বাঁকুড়ার এই গ্রাম! পাড়ি দেয় ভিন রাজ্যেও, জানুন পুরো পদ্ধতি
মৎস্যজীবী সংগঠন সূত্রের খবর, গত ৫০ বছর ধরে বাঘ সংরক্ষণের অছিলায় বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা জারি করে সুন্দরবনের নদী, খাঁড়ি ও জঙ্গলে মৎস্যজীবীদের মাছ কাঁকড়া শিকারের পরম্পরাগত জীবিকা বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। শুধু তাই নয়, মৎস্যজীবীদের উপর নিরন্তর অত্যাচার ও জুলুম চালাচ্ছে বন দফতর। প্রায় চার হাজার বর্গ কিলোমিটারের এই সুন্দরবনের মাত্র ৬০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাতেই মৎস্যজীবীরা মাছ ধরার সুযোগ পান। কিন্তু প্রতিনিয়ত সেই জায়গাও ছোট করে দেওয়ার ফলে প্রান্তিক মৎস্যজীবীদের জীবীকায় টান পড়ছে। অন্যদিকে মাতলা, রায়দিঘি ও রামগঙ্গা রেঞ্জকে ‘সুন্দরবন টাইগার প্রজেক্ট’- এর অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এর ফলে প্রান্তিক মৎস্যজীবীদের মাছ কাঁকড়া ধরার এলাকা আরও ছোট হয়ে যাবে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
মৎস্যজীবীদের দাবি, ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া আইন বাতিলের পরিবর্তে উল্টে সেটি চালু করার নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে বন দফতর। নতুন নিয়মে, চুলকাটি জঙ্গলের ১ থেকে ৮ নম্বর পয়েন্ট ও ঢুলিভাসানির জঙ্গলের ১ থেকে ৮ নম্বর পয়েন্ট পর্যন্ত মাছ ও কাঁকড়া ধরা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। ফলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ সুন্দরবনের হাজার হাজার প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের জীবন ও জীবিকা পালনের ক্ষেত্রে সংশয় দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে সুন্দরবনের সর্বত্র মাছ কাঁকড়া ধরার উপর একতরফা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।
সাউথ সুন্দরবন মৎস্যজীবী ও মৎস্য কর্মচারী সংগঠনের সহকারী সম্পাদক সুকুমার সাউ বলেন, “বন দফতরের নতুন নির্দেশিকা আমাদের জীবিকা কেড়ে নিতে চলেছে। বন দফতরের এই নিয়মের ফলে আমরা জঙ্গলের গভীরের নদী ও খাঁড়িতে মাছ ও কাঁকড়া ধরার অধিকার হারাতে চলেছি। এই আন্দোলন থামবে না৷ জোরজুলুম বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। মৎস্যজীবীদের অধিকার খর্ব হলে এই আন্দোলন আরও বৃহত্তর আকার নেবে।”