নবম শ্রেণীর পড়ুয়া আদিত্য কোল। এইটুকু বয়সেই তাকে সংসারের দায়িত্ব সামলাতে হয়, নিজের চিকিৎসার পাশাপাশি পড়াশুনা ও আহারের সংস্থান করতে হয়। প্রতিদিন প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে আদিত্য ও অদিতি খাঁপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তে যায়। এমনকি প্রতিমাসে নিজের থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা করাতে ও রক্ত নেওয়ার জন্য খুদেকে আসতে হয় বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। সেই রক্ত জোগাড় করার দায়িত্ব নিজেই নেয় সে। শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়লে বা জ্বর এলে আদিত্য বুঝে যায়, আবার তাঁর শরীরে রক্তের দরকার। তখন পাড়ার এক টোটো ভাড়া করে একাই পৌঁছে যায় বালুরঘাট ব্লাড ব্যাঙ্কে। ভাগ্য ভাল থাকলে রক্ত পায়, না হলে ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন মানুষকে অনুরোধ করে।
advertisement
আদিত্যর একমাত্র বোন অদিতি বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণীর পড়ুয়া। সে ইতিমধ্যেই বাড়ির সব কাজ শিখে ফেলেছে। আদিত্য রান্না করে, অদিতি বাসন মাজা, ঘর পরিষ্কার, কাপড় কাচার মত কাজগুলো সামলায়। বছর পাঁচেক আগে পাওয়া তাদের ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘরটিও অর্ধসমাপ্ত। কয়েক মাস আগে মিটার চুরি যাওয়ার পর থেকে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় দিন কাটছে। সন্ধ্যার পরেই ঘরে নেমে আসে অন্ধকার। ছোট বোন অদিতি স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে শিক্ষকতা করবে। বাড়ির সমস্ত কাজ করে তার পর স্কুলে যায়। অসুস্থ দাদার সেবাও করতে হয় মাঝে মাঝে।
সুস্মিতা গোস্বামী