প্রায় ২০ বছর আগে বন দফতরের জায়গায় সোনাঝুরির হাট চালু হয়েছিল। নিছকই কয়েকজন স্থানীয় গ্রামবাসী ও হস্তশিল্পীদের উদ্যোগে পথচলা শুরু হয়। বর্তমানে শনি এবং রবিবার বড় আকারে এই হাট বসে। এই দুই দিন ছাড়াও প্রতিদিন হাটে কয়েক হাজার মানুষের আনাগোনা হয়। বর্তমানে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণস্থল হল এই হাট। কিন্তু পর্যটনকেন্দ্রের জন্য ওই এলাকার জঙ্গল নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন পরিবেশপ্রেমীরা।
advertisement
পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, চারচাকা গাড়ি, বিশেষ করে টোটোর দৌরাত্ম্য ছাড়াও জঙ্গলে দিনের পর দিন মাটি চুরি, একের পর এক গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বন দফতরের জায়গায় অবৈধ নির্মাণ, গজিয়ে ওঠা হোটেল ও রিসোর্টের দাপটে প্রাকৃতিক হাটটি সৌন্দর্য হারিয়ে ক্রমশ কৃত্রিম হাটে পরিণত হচ্ছে। সদ্য ইউনেস্কো শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ আখ্যা দিয়েছে। এর পরও কারোর যেন হুঁশ নেই। দিন দিন খোয়াই নিজের ঐতিহ্য হারাচ্ছে। সেই কারণে চিন্তায় পরিবেশপ্রেমীরা।
আরও পড়ুন: বডি বিল্ডিংয়ে বাকি ভারতকে মাত মালদহের! বিরাট সাফল্য বাংলার জেলার
এবার জঙ্গল বাঁচাতে পিলার দিয়ে চিহ্নিতকরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করল বনদফতর। বীরভূমের জেলা বন দফতরের আধিকারিক দেবাশিস মহিমা প্রসাদ প্রধান জানান, সোনাঝুরি হাটকে নিজেদের সীমানায় আয়ত্তের মধ্যে আনতে চলেছে বন দফতর। বন দফতরের অধীনে থাকা জমি চিহ্নিতকরণ ছাড়াও শীঘ্রই ১২১ কিলোমিটার জঙ্গলে পিলার দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জীববৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখেই জঙ্গলের ক্ষতি কোনওভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।
এদিকে জমি চিহ্নিতকরণ শুরু হতেই বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় হস্তশিল্পী, কুটিরশিল্পী ও আদিবাসীশিল্পীরা বিকিকিনি উদ্দেশ্যেই জঙ্গলের মধ্যেই হাটে বসাচ্ছেন। হাটকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার মহিলারও স্বনির্ভর হয়েছেন, আয়ের নতুন উৎস খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু বন দফতর জায়গাটি ঘিরে ফেললে সেখানে হাটের আর অস্তিত্ব থাকবে না বলে আশঙ্কা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
সৌভিক রায়