বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু। বীরভূমের সিউড়ির নগরী গ্রাম পঞ্চায়েতের লতাবুনি ও কাঁটাবুনি গ্রামের স্বনির্ভর দল 'শ্রীমতি' ও ' আকাশের তারা'। তাদের পরিশ্রমেই গভীর জঙ্গলে আগাছার বদলে অর্গানিক সুদর্শনা জাতের হলুদ গাছের ছড়াছড়ি। এই দুটি দলে মোট ২১ জন মহিলা সদস্য ।
২০২০ সালে যখন লক ডাউন শুরু হয়েছিল, পৃথিবীর ব্যস্ততা থেমে গেলেও থেমে থাকেননি এই স্বনির্ভর দলের সদস্যরা। বনদপ্তরের অনুমতি নিয়ে স্থানীয় সিউড়ী এক নম্বর ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে কৃষিদপ্তরের 'আত্মা' ( ATMA )নামক প্রকল্পের মাধ্যমে সেই সময় এই দুটি দলের সদস্যদের স্বনির্ভর হওয়ার জন্য হলুদের বীজ বপন থেকে হলুদ ফলানো পর্যন্ত সাহায্য করা হয়েছিল হয়েছিল। ফলাফল এল হাতে নাতে।
advertisement
গভীর জঙ্গলের মধ্যে কম আলো , কম জলেই ফলিয়ে ফেললেন অর্গানিক সুদর্শনা হলুদ। জঙ্গলের গাছ থেকে পড়ে যাওয়া পাতা থেকি তৈরী জৈব সারের ফলাফল অবাক করেছে জেলা প্রশাসনকে। এই দুই স্বনির্ভর দল গুলিকে তাদের চাষের সুবিধার্থে ২৫ কেজি করে সুদর্শনা জাতের হলুদ , এছাড়াও বিশেষ পদ্ধতি দিয়ে তারা বীজ গুলিকে শোধন করে নেওয়ায় এই হলুদ ফলনে রোগের তেমন আক্রমণ হয়নি এবং হলুদের গোঁড়া পচা রোগের বিরুদ্ধেও বেশ সুফল পাওয়া গিয়েছিল। হলুদের বীজের জাত নির্বাচন থেকে ফসল ফলানো পর্যন্ত প্রযুক্তিগত দিক থেকে সমস্ত রকমভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে 'আত্মা প্রকল্প ' থেকে প্রদান করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: 'বিয়ে করবে আমায়', দশ বছরের বড় প্রেমিকার সঙ্গে যা করল প্রেমিক! অবাক শক্তিগড়
ওই গ্রাম গুলির মধ্যে ঘন জঙ্গলের পাতা থেকে কিভাবে জৈব সার তৈরি করা যায় , সেই প্রশিক্ষণও 'আত্মা প্রকল্প' থেকে দেওয়া হয়েছিল। আর ঠিক ওই দলের সদস্যরা সেই প্রশিক্ষণ কাজে লাগিয়েই তাদের নিজস্ব গ্রামের জঙ্গলের মাটিতে কম আলো ও জল দিয়ে কোনো রাসায়নিক ব্যবহার ছাড়াই অর্গানিক হলুদ ফলিয়ে এক দারুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সবার সামনে । সেই লকডাউনের সময় থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ২ থেকে 'শ্রীমতি' ও 'আকাশের তারা' এই দুই দলের সদস্যরা হলুদ তোলার কাজ শুরু করেছে। দেখা যাচ্ছে এক বিঘা জায়গা থেকে মোটামুটি ৫ কুইন্টাল করে সুদর্শনা অর্গানিক হলুদের ফলন হয়েছে । এবং জঙ্গলের মধ্যে পর্যাপ্ত আলো ও জলের অভাব থাকা সত্ত্বেও এই ফলন যথেষ্ট আশারুপ সকলের কাছেই ।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, মোদিকে ধন্যবাদ বঙ্গ বিজেপির! কিন্তু কেন?
'আকাশের তারা' স্বনির্ভর দলের সদস্যা নমিতা হেমব্রম জানান ," অনেক পরিশ্রমের পর আমরা জঙ্গলের একটি অংশ পরিষ্কার করে আলো ও জলের অভাবে অনেক হলুদ ফলিয়েছি । আগামীদিনে যাতে আমরা আরো ফলন করতে পারি তারজন্য এই জমি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি।" সমাজ কর্মী গৌতম রায় বলেন ," এনাদের এই সাফল্যে সত্যিই হতবাক আমি । আলো ও জলের অভাবেই হলুদ চাষ করে সত্যিই নজর করেছে তারা । পরবর্তীতে তারা জমি বাড়ানোর দাবিও জানিয়েছেন।" এ ডি এ মধুরিমা মন্ডল জানান , " এই দুই স্বনির্ভর দলের হলুদ ফলন সত্যিই অবাক করেছে । আগামীদিনে যাতে তারা আরো ভালোভাবে এগিয়ে যেতে পারে সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি আমরা।"