আরও পড়ুন- বলুন দেখি…দেশের কোথায় ‘টাকা’ ছাপানো হয়? ৯৯ শতাংশই জানেন না সঠিক উত্তর
আজকের দিনও সেই মন্টু তার স্বপ্ন শিল্প চর্চাকে বিন্দুমাত্র ভুলে যায়নি। পান বিক্রির সঙ্গে সঙ্গেএকটু ফাঁক পেলেই তালপাতা ও খেজুর পাতা দিয়ে তৈরি করতে থাকে নানা ধরনের খেলনা, ঘর সাজানোর জিনিস ও গরমের হাত থেকে বাঁচতে মাথার টুপি। সকলের কাছে মন্টুদা নামে পরিচিত ঝাড়গ্রামের এই মন্টু।
advertisement
ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবা পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের পাশে সাবিত্রী সিনেমা হল মোড়ে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে পানের দোকান চালিয়ে যাচ্ছে ঝাড়গ্রামের এই মন্টু। পান বিক্রির সঙ্গে সঙ্গেহাতে একটুকু সময় পেলে তৈরি করে খেজুর পাতা ও তালপাতা দিয়ে নানা সামগ্রী। মন্টুর দোকানে প্রতিনিয়ত পান খেতে আসা খদ্দেরও মন্টুর হাতের কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়। ঝাড়গ্রামের শহরের বিশিষ্ট সমাজসেবী বিদ্যুৎ ঘোষ বলেন,\”আমি প্রতিনিয়ত মন্টু দার দোকানে পান খেতে আসি। মন্টুদা খুব সুন্দর পান বানায়। আমি মাঝেমধ্যেই দেখি ফাঁকা সময় তাল পাতা ও খেজুর পাতা দিয়ে কিছু একটা তৈরি করতে থাকে। কখনও ঘর সাজানোর ফুল ,বাচ্চাদের খেলার সামগ্রী, টুপি ইত্যাদি তৈরি করে থাকে\”।
আরও পড়ুন- একঘরে ৩ জন! ২ স্বামীকে একসঙ্গে কী ভাবে সামলান? শান্তভাবে স্ত্রী বললেন, ‘আমি ঠিক…’!
আরও পড়ুন- বলুন তো, ভারতে সবচেয়ে বেশি ‘আমিষ’ খায় কোন রাজ্যের মানুষ? ‘উত্তর’ আপনাকে চমকে দিতে বাধ্য
ঝাড়গ্রামের এই মন্টু ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ থেকে বি কম পাস করে। চাকরি না পাওয়ায় অবশেষে পরিবারের হাল ধরতে পানের দোকান শুরু করেছিল। কিন্তু ছোট থেকেই মন্টু হাতের কাজ করতে খুব ভালোবাসত। তাই আজও সে তার হাতের কাজ পান দোকান চালানোর পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছে। আজও বাঁচিয়ে রেখেছে তার শিল্পী সত্তাকে। মন্টু বলেন,\”আমি ছোট থেকেই খেজুর পাতা ও তাল পাতা দিয়ে টুপি, ঘর সাজানোর ফুল, পুতুল, হরিণ তৈরি করতে খুবই ভালবাসতাম। পরিবারের তাগিদে আমাকে পান দোকান চালাতে হয়। পান বিক্রির পাশাপাশি আমি ফাঁকা সময় পেলেই তালপাতা ও খেজুর পাতা দিয়ে কিছু না কিছু তৈরি করতে থাকি। গরমের সময় অনেকেই আমাকে টুপি বানানোর জন্য আবদার করে। আমি তাদেরকে বানিয়ে দিই। আমারও ভালো লাগে পান খেতে এসে লোক আমার হাতে তৈরি সামগ্রী দেখে আমার প্রশংসা করে।
মন্টুর আদি বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলার জামনি ব্লকের দুবড়া গ্রামে। মন্টুর পরিবার কংগ্রেসের পরিবার হওয়ায় তৎকালীন রাজনৈতিক অস্থিরতায়নিপীড়িত হয়ে মন্টুর পরিবার চলে আসে ঝাড়গ্রামে। বর্তমানে সে ঝাড়গ্রাম শহরের নতুনডিহি এলাকার বাসিন্দা। পান দোকান চালানোর পাশাপাশি নিজের শিল্পী চর্চা কেউ সকলের সামনে তুলে ধরছে এই মন্টু। তার শিল্পী চর্চা কে বাঁচিয়ে রাখায় তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন বহু মানুষ।
বুদ্ধদেব বেরা