স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভীষণপুরের বটতলায় চা দোকান চালান বাদল চন্দ্র মাইতি। প্রতিদিনের মতো সেদিনও তাঁর দোকানে ভিড় জমে। সেই ভিড়ের মধ্যেই হাজির হন এলাকারই বাসিন্দা ৪৫ বছরের ভবানন্দ দাস। তিনি এক কাপ চা ও কিছু বিস্কুট খান। মোট দাম দাঁড়ায় আট টাকা। কিন্তু ভবানন্দ বাবু বিল মেটান ২০০ টাকার একটি নোট দিয়ে। দোকানদারের কাছে পর্যাপ্ত খুচরো না থাকায় তিনি গ্রাহককে অনুরোধ করেন পরে এসে টাকা মিটিয়ে দিতে। এখান থেকেই শুরু হয় প্রবল বাদানুবাদ।
advertisement
আরও পড়ুন: জল নিয়ে রাজনীতি! বামেদের পঞ্চায়েতে পানীয় জল পাচ্ছেন না তৃণমূল সমর্থকরা, ব্যাপক উত্তেজনা এলাকায়
চোখের সামনে খুচরো না পাওয়ার রাগ যেন পাহাড়সম হয়ে উঠল। একে তো খুচরো নেই, তার ওপরে ‘পরে দিয়ে যেও’— ভবানন্দ বাবুর মনে এমন আগুন ধরল যে মুহূর্তের মধ্যে রাগের মাথায় দোকানের ভেতরে রাখা ফুটন্ত চা দোকানদারের গায়ে ঢেলে দেন। হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনায় চমকে ওঠেন আশেপাশের লোকজন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
চোখের সামনে তাজা দুধ-চা মানে অমৃতসদৃশ পানীয়, আর সেই চা যদি গায়ে এসে পড়ে—তাহলেই বোঝা যায় কী অসহ্য যন্ত্রণা! গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় বাদলবাবুকে প্রথমে ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে তড়িঘড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
এদিকে আহত দোকানদারের স্ত্রী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ভগবানপুর থানার পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে। মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্ত ভবানন্দ দাসকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে আঘাত এবং মারাত্মক চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, চা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক নতুন কিছু নয়, তবে এইভাবে খুচরোকে কেন্দ্র করে এমন হিংসাত্মক ঘটনা তাঁরা আগে দেখেননি। এলাকায় এখন চর্চার বিষয়, “চা খাওয়া যায়, আড্ডা মারা যায়, কিন্তু চা-স্নান—সে আবার কবে থেকে শুরু হল!”