গত কয়েক বছর ধরেই অশোকনগর বিদ্যাসাগর বানীভবন হাইস্কুলের সরস্বতী পুজো করতেন স্কুলেরই এক ছাত্র। পুরুষ পুরোহিত যোগে পুজোর এই গতানুগতিক নিয়ম ২০২৩ সাল থেকেই ভেঙে দিয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বৈষম্য দূর করতেই এই পদক্ষেপ। প্রথাগত নিয়ম ভেঙে তৃতীয় বছরেও বাগদেবীর পুজো সারল একাদশ শ্রেণির কলা বিভাগের ছাত্রী পূর্ণিমা বাড়ুই। পূর্ণিমার বাবা পেশায় দিনমজুর। আর পাঁচটা মেয়ের মতো বাড়িতেই সন্ধ্যার সময় কখনও কখনও ধূপ, ধুনো জ্বালাতেন। কিন্তু পুজোর মন্ত্র তাঁর কাছে অজানাই ছিল। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে এ’বছর সরস্বতীপুজো করার প্রস্তাব পাওয়ার পরেই একেবারে উঠেপড়ে মন্ত্র-সহ পুজোর নিয়ম ঝালিয়ে নেওয়া শুরু করেন পূর্ণিমা।
advertisement
সরস্বতী পুজোর জন্য মন্ত্র শিক্ষায় তাঁকে তালিম দিয়েছেন স্কুলের শিক্ষক দেবজ্যোতি আচার্য এবং পরিচালন সমিতির সভাপতি দীপক কুমার চক্রবর্তি। খুব দ্রুত মন্ত্র উচ্চারণ করা থেকে পুজোর আনুষঙ্গিক নিয়মের খুঁটিনাটি রপ্ত করে নেন পূর্ণিমা। সংস্কৃতে মন্ত্র উচ্চারণ থেকে যজ্ঞের নিয়মও দ্রুত শিখে নেন। দু’জনের কাছ থেকে প্রায় একমাসের তালিম নিয়েছেন পূর্ণিমা।
প্রথমে একটু নার্ভাস থাকলেও, স্কুলের চেনা পরিবেশ, পরিচিত সহপাঠী থেকে শিক্ষক শিক্ষিকাদের সামনে সেই ভয় কেটে গিয়েছিল সোমবার। শাড়ির সঙ্গে গায়ে নামাবলী জড়িয়ে স্কুলের মঞ্চে বাগদেবীর সামনের আসনে বসেন, তাঁর উচ্চারিত মন্ত্রেই অঞ্জলি দিলেন সকলে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ডা: মনোজ ঘোষ জানালেন, ” ভক্তিটাই আসল। খাবার হোক আধপেটা, কিন্তু শিক্ষা চাই ভরপেট। ”
Rudra Narayan Roy